আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্টঃ
গাজায় যাতে অঞ্চলে আরও সাহায্য পাঠানো যায় সেজন্য দুটি মানবিক পথ খোলার অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েল এবং উত্তর গাজার মধ্যকার ‘ইরেজ ক্রসিং’ পুনরায় চালু এবং আশদোদ বন্দর ব্যবহার করার অনুমোদন দিয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজায় আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের জন্য ক্রসিংটি (ইরেজ) খুলে দেয়া হবে। এছাড়া মন্ত্রিসভা গাজায় আরও সাহায্য স্থানান্তর করতে সহায়তা করার জন্য ইসরায়েলের আশদোদ বন্দর ব্যবহার করার অনুমোদন দিয়েছে বলেও জানা গেছে।বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) গাজায় বেসামরিক ও মানবিক কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাইডেন। ফোনে তিনি নেতানিয়াহুকে বলেছেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বেসামরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হলে মার্কিন নীতি পরিবর্তন করবে যুক্তরাষ্ট্র।
যদিও সীমান্ত ক্রসিংটি কীভাবে পুনরায় চালু করা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সিএনএন বলছে, গাজার দক্ষিণ সীমান্তের ক্রসিংয়ের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ সাহায্য বিতরণের অনুমতি দেয়া হয়েছে তা এই অঞ্চলে মানুষের দুর্ভোগের মাত্রার তুলনায় অপর্যাপ্ত।এদিকে ইসরায়েলের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বৃহস্পতিবার বলেছেন, এটি অবশ্যই ইতিবাচক খবর। তবে এটি কীভাবে বাস্তবায়িত হয়, তা আমাদের দেখতে হবে। আমাদের একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি এবং ব্যাপক সহায়তার প্রয়োজন।
সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) সাতজন কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের মধ্যেই সীমান্ত ক্রসিং খোলার এই ঘোষণা এলো। ইসরায়েল ওই হামলার দায় স্বীকার করলেও দাবি করেছে, হামলাটি ইচ্ছাকৃত ছিল না।
এছাড়া ক্রসিং খোলার ঘোষণার আগে ফোনকলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, গাজার সামগ্রিক মানবিক পরিস্থিতি ‘অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়েছে’। একইসঙ্গে ইসরায়েলকে সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে বা ‘পরিণতি ভোগ’ করতে সতর্ক করেন তিনি।
এদিকে ভিন্ন এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইরেজ ক্রসিংটি অস্থায়ী বা সাময়িকভাবে খোলা হচ্ছে।অনেক বিশ্লেষক বলছেন, যে উপায়েই হোক গাজায় যত দ্রুত সম্ভব আরও বেশি ক্রাণ সহায়তা পৌঁছানো জরুরি। কারণ সেখানকার বাসিন্দারা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেস, তা চলতে থাকলে অচিরেই হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মৃত্যুবরণ করবে। সেক্ষেত্রে ইসরায়েলের সীমান্ত ক্রসিং চালু ও বন্দর ব্যবহার করার অনুমোদনের বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও, এটিকে স্থায়ী কোনো সমাধান বলে মনে করছেন না তারা।