জেলা প্রতিনিধি,ঝিনাইদহঃ 

ঝিনাইদহে জেলা বিএনপির আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার যোগ দেওয়া নিয়ে দুই দলের নেতাকর্মীদের মাঝেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শুক্রবার বিকেলে শহরের প্রান্তিক শিশু পার্কে এ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

ইফতার অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ পর বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে সেখানে যান ঝিনাইদহ সদর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম। এতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে। এ সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী অভিযোগ করেন- ইফতার মাহফিলে অর্থায়নও করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মাসুম।

ওই ইফতার মাহফিলে দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসতে থাকে। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা প্রমুখ।এই ইফতারে যোগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান মাসুম বলেন, ‌‘এটা কোন জনসভা না, শুধুই ইফতার মাহফিল। এখানে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামায়াত সবাই যায়। এটা দোষের কি? আমি সামনে উপজেলা নির্বাচনে ভোট করবো, তাই সেখানে গেছি।’

তবে বিএনপির ইফতার মাহফিলে তার উপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ পৌর আওয়ামী লীগের নেতারা। এ বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, বিএনপির ইফতার মাহফিলে তার যাওয়া উচিত হয়নি।পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জীবন কুমার বিশ্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে মিজানুর রহমান মাসুম বিএনপির মাহফিলে যেতে পারেন না। হয়তো তার ব্যক্তি স্বার্থের কারণে সেখানে তিনি গেছেন।

এদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ বলেন, দলীয় পরিচয়ে না, একজন সুশীল সমাজের মানুষ ও ব্যবসায়ী হিসেবে আমাদের ইফতার মাহফিলে এসেছিলেন মিজানুর রহমান মাসুম। তাকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। তবে ইফতার মাহফিলে তার অর্থায়নের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এই অভিযোগ সঠিক না। তবে বড় রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগভাবে অর্থ সহযোগিতা পেয়ে থাকে। এতে কেউ অর্থায়ন করলে করতে পারে।

জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে কেন টাকা নিয়ে জেলা বিএনপির ইফতার মাহফিল করতে হবে। প্রথমে আমি জানতে পারিনি এ ঘটনা। পরে জানলাম জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আরও কয়েকজন নেতা পৌর আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মাসুমের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ইফতার মাহফিল আয়োজন করেছে। এটা জানার পরপরই আমি মাহফিল বয়কট করে সেখান থেকে চলে আসি। তাদের জিজ্ঞাসাও করেছিলাম কেন এমন করা হলো।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে একজন সম্ভাব্য প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে ইফতার মাহফিল করা মানে বিএনপিকে বিক্রি করা, ভোটারদের বিক্রি করা।