অস্ত্রের মজুত বাড়িয়ে দুর্র্ধষ কেএনএফ

প্রকাশিত: ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি,বান্দরবানঃ 

বান্দরবানের থানচি ও রুমায় ব্যাংকে দুর্র্ধষ ডাকাতি ও থানায় হামলার পর কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, কেএনএফ তাদের অস্ত্রের মজুত বাড়িয়েছে। শক্তি বৃদ্ধি করেছে তাদের সশস্ত্র শাখার। কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে তারা ধারাবাহিকভাবে হামলা করছে। আগের তুলনায় ৩-৪ গুণ সদস্য বাড়িয়ে এখন আরও দুর্র্ধষ কেএনএফ। তাদের সক্রিয় নারী সদস্যরা ব্যাংক ডাকাতি ও থানচি থানা হামলায় সরাসরি অংশ নেয়। সংগঠনটির সশস্ত্র শাখাকে চিহ্নিত করার জন্য একাধিক টিম গঠন করেছে পুলিশ। গতকাল পর্যন্ত কেএনএফের কেউ আটক হয়নি।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়, সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণের পর কেএনএফ গহিন পাহাড়ে তাদের গোপন আস্তানায় নিয়ে যায়। র‍্যাবের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

অপহরণের পর নেজাম কীভাবে ৪৭ ঘণ্টা কাটালেন, তা খুঁজতে গিয়ে কেএনএফের চমকপ্রদ অনেক তথ্য বের হয়। তবে প্রকাশ্যে কেউ এ নিয়ে কথা বলতে চাননি। ১০-১২ জন সশস্ত্র সদস্য সবসময় তাঁর পাহারায় ছিল। অধিকাংশ সময় নেজামের চোখ ছিল বাঁধা। ছয় দফায় তাঁর অবস্থান বদল করা হয়েছে। প্রথম দিন রাতে নেজামকে নুডলস খেতে দেওয়া হয়। এরপর কলাপাতায় গরম ভাত, ডাল ও সবজি খেতে দেয় কেএনএফের অস্ত্রধারীরা।কেএনএফ সন্ত্রাসীরা নেজামের কাছে জানতে চায়, তার ব্যাংকের ভল্টে কত টাকা ছিল। নেজামকে রাতে পাহাড়ি পথে দুই ঘণ্টা হাঁটিয়ে আস্তানায় নেওয়া হয়। পথ চলার জন্য তাঁকে একটি বাটন ফোন দেওয়া হয়।

এদিকে কয়েক মাস ধরে শান্তি প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা কেএনএফের অস্ত্রের মজুত বাড়িয়ে হঠাৎ দুর্র্ধষ হয়ে ওঠার পেছনে কয়েকটি কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ধরনের পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনকে মোকাবিলায় আরও দূরদর্শিতার পরিচয় দেওয়ার কথা বলছেন তারা। এমনকি শান্তি প্রক্রিয়ায় অংশ হিসেবে গত বছরের জুলাই থেকে যারা কেএনএফের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন, তাদের আরও বিচক্ষণতার সঙ্গে সংগঠনটির চরিত্র ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। কেএনএফের পেছনে কোনো বড় শক্তি রয়েছে কিনা তা বের করা জরুরি বলেও মনে করছেন তারা।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ বলেন, কেএনএফ একই সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত। তাই তাদের খুব সহজে বিশ্বাস করা যাবে না। সংগঠনটির সঙ্গে শান্তি আলোচনা বৈঠকে যারা জড়িত রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কৌশল সম্পর্কে তারা অভিজ্ঞ কিনা, সেটাও দেখার বিষয়। আবার ভূরাজনীতির কৌশলগত কারণে কেএনএফকে কেউ ব্যবহার করেছে কিনা তা বের করা জরুরি। তবে পার্বত্য এলাকায় আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে সক্ষমতা রয়েছে তার সিকিভাগও কেএনএফের নেই। এর আগে তাদের চেয়ে দুর্র্ধষ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করেছি আমরা।

পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত ছিলেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম। তিনি সমকালকে বলেন, কেএনএফের ভেতরে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে যারা রয়েছে, তাদের ভেতর থেকে কোনো গ্রুপ বেকায়দায় ফেলতে পারে। তারা হয়তো ভাবতে পারে, শান্তির পথে চলে গেলে সংগঠনের গুরুত্ব কমে যাবে। তবে এই হামলার বড় প্রভাব থাকবে।তিনি বলেন, কেএনএফের প্রভাবাধীন এলাকায় শান্তি অনিশ্চিত হয়ে গেল। এ ছাড়া তাদের সঙ্গে পাহাড়ের অন্য কোনো বড় সশস্ত্র গ্রুপের নতুন যোগাযোগ তৈরি হয়েছে কিনা, তাও দেখতে হবে।

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল মাহাবুব আলম বলেন, ম্যানজারকে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় উদ্ধার করা প্রথম অগ্রাধিকার ছিল। সেটা সফলভাবে করা গেছে। বান্দরবানে যতগুলো অপরাধ কেএনএফ করেছে, পর্যায়ক্রমে সবগুলোর ক্ষেত্রেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেশ কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে তারা অপরাধ ঘটাচ্ছে বলে তথ্য আমরা পেয়েছি। কেউ ছাড় পাবে না।

যেভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা- রুমা ও থানচিতে দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় পরপর ডাকাতি ও থানায় হামলার মধ্য দিয়ে কেএনএফের বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা ও অপারেশনাল সক্ষমতা সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়া গেছে। প্রকাশ্যে তারা ব্যাংক লুট করেছে। অপহরণ করা হয় ম্যানেজারকে। এর পর তারা মুক্তিপণ দাবি করে।

এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে উঠে এসেছে ডাকাতি ও হামলার ঘটনায় এ গোষ্ঠীর শতাধিক অস্ত্রধারী সদস্য অংশ নেয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে থানচি থানায় হামলা করে। মূলত থানার গার্ডরুম আক্রমণ করে অস্ত্র লুট করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। তবে পুলিশ ৫০০ রাউন্ডের মতো গুলি ছুড়ে তাদের নিবৃত্ত করে।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বান্দরবানে পুলিশের বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। জেলার বাইরে থেকে আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও রিজার্ভ পুলিশ সেখানে নেওয়া হয়। বাড়ানো হয়েছে চেকপোস্ট ও টহল। এ ছাড়া পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মাঠে থেকে সব ধরনের নির্দেশনা দিচ্ছেন।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, কেএনএফ তাদের সক্ষমতা জানান দিতে বান্দরবানের তিন ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতা, উত্তরসূরিদের অনুপ্রেরণা ও বহির্বিশ্বে তাদের সহযোগীদের সংগঠনটির সক্ষমতা জানান দিতেই ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও হামলার ঘটনাটি কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা ঘটিয়েছে। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা সমকালকে বলেন, যৌথ বাহিনী অভিযান চালাবে। বান্দরবানে বাড়তি ফোর্স নিয়োজিত করা হয়েছে।

বান্দবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) আবদুল করিম সমকালকে বলেন, প্রযুক্তিগত তদন্ত ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্যাংক ডাকাতি এবং থানায় হামলায় জড়িত কেএনএফ সশস্ত্র গ্রুপকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশের অস্ত্র লুট করতে বৃহস্পতিবার তারা থানা আক্রমণ করেছিল। দুটি গাড়িতে তারা থানার সামনের সড়ক পর্যন্ত এসেছিল। হামলায় কেএনএফের নারী সদস্যদের অস্ত্রসহ দেখা গেছে। পুলিশ গুলি ছুড়তে থাকলে তারা পিছু হটে।

গোপন আস্তানা- বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে কেএনএফের সুরক্ষিত কিছু আস্তানা রয়েছে। ব্যাংক ম্যানেজার নেজামকে এ ধরনের একাধিক আস্তানায় রাখা হয়েছিল। অপহরণের পর তাঁকে কোনো মারধর করা হয়নি। পাহাড়ের মধ্যে অস্ত্রধারীরা তাঁকে ঘিরে ছিল। হঠাৎ হঠাৎ ওই আস্তানায় খাবার আসত। ম্যানেজার যেখানে ছিলেন, সেখানে পাহারায় নিয়োজিত কয়েকজন বাংলা ভালোভাবে বুঝতে পারে না। সশস্ত্র পাহারায় কখনও পাহাড়ি ও ঝিরির পথ ধরে ও মোটরসাইকেলে এক আস্তানা থেকে আরেক আস্তানায় নেওয়া হতো নেজামকে। মঙ্গলবার অস্ত্রের মুখে ধরে নেওয়ার পর চোখ বেঁধে বেথেলপাড়ার পাশ দিয়ে ঝিরির পথে নেওয়া হয়। কিছু দূর নিয়ে চোখ খুলে দিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা হাঁটানোর পর একটি নির্জন এলাকায় ঘুমাতে দেওয়া হয়।

বুধবার সকালে নেওয়া হয় আরেক ঝিরিতে। সেখানে কলাপাতায় মোড়ানো ভাত, ডাল ও ডিম ভাজি খেতে দেওয়া হয়। পরে আবার হাঁটিয়ে আরেক জায়গায় নেওয়া হয়। মাঝে নেজামকে ১০-১৫ মিনিট বিশ্রাম করার সুযোগ দেয় অস্ত্রধারীরা। বুধবার রাতে তাঁকে একটি মাচাং ঘরে অস্ত্রধারীদের সঙ্গে ঘুমাতে দেওয়া হয়।

এরপর নেজামকে পরিবারের সদস্যদের ফোনে কথা বলার সুযোগ দেয় অস্ত্রধারীরা। উদ্ধারে যাতে পরিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা না নেয়, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। ফোনকলের সূত্র ধরেই নেজামের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পায় র‌্যাব। কেএনএফের সশস্ত্র গ্রুপের নাম কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, কেএনএর হাতে অনেক অস্ত্র ও গোলাবারুদ রয়েছে।

নিস্ফল শান্তি আলোচনা- গত বছরের জুলাইয়ে কেএনএফের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু হয়। দু’দফা ভার্চুয়াল আলোচনার পর ৫ নভেম্বর প্রথমবার মুখোমুখি বৈঠক হয়। প্রথম বৈঠকটি হয়েছিল রুমার মুনলাই পাড়ায়। এর পর ৫ মার্চ বান্দরবানের রুমা উপজেলার বেথেল পাড়ায় দ্বিতীয় দফায় মুখোমুখি বৈঠক হয়েছে। ২২ এপ্রিল তৃতীয় দফায় সশরীরে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে তা বাতিল করে দেয় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি।

কমিটির অন্যতম সদস্য জারলম বম বলেন, কেএনএফের সর্বশেষ অপকর্মের পর শান্তি আলোচনা বাতিল করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক ও বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জানান, ব্যাংক ডাকাতি এবং ত্রাস সৃষ্টির ঘটনায় কেএনএফের সঙ্গে সংলাপ করার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

পাহাড়ে যত গ্রুপ- স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে গত শতকে সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র লড়াই শুরু করে। তাদের সশস্ত্র শাখা শান্তি বাহিনী নামে পরিচিত ছিল। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি হওয়ার পর পাহাড়ে স্বস্তি ফিরে আসে। তবে সেই সুবাতাস বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। পাহাড়ে ছোট ছোট কয়েকটি সশস্ত্র গ্রুপ তৈরি হয়।

চুক্তির পর চুক্তিবিরোধীরা পাহাড়ি তরুণদের নিয়ে একটি গোষ্ঠী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলে। তাদের সঙ্গে জেএসএসের সংঘাত এখনও চলছে। এর মধ্যে ২০০৭ সালে জেএসএসের একটি অংশ মূল দল থেকে বের হয়ে জেএসএস (লারমা) নামে আরেকটি সংগঠন গড়ে তোলে। ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময় ম্রো ন্যাশনাল পার্টি (এমএনপি) নামে একটি দল গড়ে ওঠে বান্দরবানের আলীকদমে।২০১৫ সালের নভেম্বরে দলটির ৭৯ জন সদস্য একযোগে আত্মসমর্পণ করেন। ২০১৭ সালে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক নামে আরেক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ২০১৮ সালে বান্দরবানে ‘মগ পার্টি’ তৎপরতার তথ্য সামনে আসে।

কেএনএফ যা বলছে- গতকাল কেএনএফ তাদের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়। সেখানে তারা দাবি করে, অপারেশন চলাকালে কোনো নিরীহ বাঙালিকে অহেতুক অপহরণ করেনি তারা। অপহরণ করা হলেও প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদের পর মুক্ত করা হয়। এর জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ও ব্যাংক ম্যানেজার। এখন পর্যন্ত কোনো বাঙালি বন্দি অবস্থায় কেএনএফ ক্যাম্পে নেই। আর কেএনএফ এখন পর্যন্ত নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করেনি।

কেএনএফ দাবি করেছে, শান্তি আলোচনায় স্বাক্ষরিত সমঝোতা শর্তসমূহ লঙ্ঘন করা হয়েছে। শর্ত মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত কুকি–চিন জনগোষ্ঠীকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়নি। শান্তি আলোচনাকে কেন্দ্র করে সশস্ত্র তৎপরতা বন্ধ করেছে কেএনএফ। তবে শান্তি আলোচনার সঙ্গে যুক্ত একাধিক সদস্য সমকালকে বলেছেন, কেএনএফ যেসব দাবি করেছে তা সঠিক নয়।

আলীকদমে কী ঘটেছিল- রুমা ও থানচির ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে আলীকদমে সেনা ও পুলিশের একটি যৌথ চেকপোস্টে কেএনএফ হামলা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়। গণমাধ্যমে ওই তথ্য প্রচারও হয়। তবে পরে ওই ঘটনার আসল কাহিনী বেরিয়ে আসে।

বান্দরবানের একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আলীকদম থেকে একটি মিনি ট্রাক থানচির দিকে যাচ্ছিল। তবে পথিমধ্যে কয়েকজন এলাকাবাসী ট্রাকচালককে থানচির দিকে না যাওয়ার পরামর্শ দেন।কেএনএফের হামলার পর বান্দরবানের পরিস্থিতি ওই চালকের কাছে তুলে ধরেন। এরপর ভয় পেয়ে ট্রাকচালক দ্রুত হেডলাইট বন্ধ করে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি টান মারেন। হেডলাইট বন্ধ এবং গাড়ির অস্বাভাবিক গতি দেখে যৌথ চেকপোস্টে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সন্দেহ হয়। তারা মিনি ট্রাক লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা বলেন, আলীকদমের ঘটনাটি ছিল ভুল বোঝাবুঝি থেকে। সেখানে কেএনএফ হামলা করেনি। আহত ট্রাকচালকসহ আরেকজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।