আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্টঃ
পাকিস্তান সফরে গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। সোমবার (২২ এপ্রিল) তিন দিনের সরকারি সফরে দেশটিতে পৌঁছান তিনি।গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই নির্বাচনের পর দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে এটিই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের সফর। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি সোমবার তিন দিনের সরকারি সফরে পাকিস্তানে পৌঁছেছেন। এদিন সকালে নূর খান বিমানঘাঁটিতে ইরানি প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান পাকিস্তানের গৃহায়ন ও পূর্তমন্ত্রী মিয়া রিয়াজ হোসেন পীরজাদা।রেডিও পাকিস্তানের মতে, প্রেসিডেন্ট রাইসি আজ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সাথে দেখা করবেন এবং দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনাও হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী হাউসে পৌঁছালে সফররত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।’
ইরানের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ আর্থ ডে উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে একটি চারা রোপণ করবেন। এতে বলা হয়েছে, তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন।রেডিও পাকিস্তান বলেছে, ‘দুই নেতা ইসলামাবাদে একটি হাইওয়েকে ইরান এভিনিউ নামকরণ সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। তারা একটি প্রেস টকও করবেন এবং প্রধানমন্ত্রী ইরানের প্রেসিডেন্ট এবং তার প্রতিনিধি দলের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজেরও আয়োজন করবেন।’ এর আগে রোববার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, প্রেসিডেন্ট রাইসির সাথে তার স্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি একটি বড় ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলও থাকবে।
পররাষ্ট্র দপ্তর আরও বলেছে, ‘পাকিস্তান-ইরান সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে এবং বাণিজ্য, সংযোগ, জ্বালানি, কৃষি, এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য উভয় পক্ষের বিস্তৃত এজেন্ডা থাকবে। তারা সন্ত্রাসবাদের অভিন্ন হুমকি মোকাবিলায় আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নানা ঘটনা এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করবেন।’
উল্লেখ্য, গত কয়েক দশক ধরে পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইরান নজিরবিহীন ভাবেই পাকিস্তানের ভূখণ্ডে বিমান হামলা করে। জবাবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীও ইরানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়।উভয় হামলাতেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। মূলত এটিই ছিল গত কয়েক দশকের মধ্যে এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে প্রথম কোনও বড় ধরনের উত্তেজনা।
অবশ্য দ্বিপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গি বাদ দিলেও প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাকিস্তানে এই সফরটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ গত কয়েকদিন ধরে ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলাসহ উত্তেজনা চলছে।এছাড়া সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও গত সপ্তাহে পাকিস্তানে সফর করেছিলেন।