জেলা প্রতিনিধি,নোয়াখালীঃ
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর গ্রামে সন্ধান পাওয়া নতুন গ্যাস কূপে খনন কাজ শুরু হয়েছে।। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) এই খনন কাজ করেছে। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্প।
সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল থেকে দুই শতাধিক প্রকৌশলী ও শ্রমিক এ কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেছেন। আগামী ১২০ দিন চলবে খননের কাজ।জানা যায়, ‘দেশের অর্থনীতি ও শিল্পায়নকে আরও গতিশীল করতে আমাদের বাড়তি গ্যাস প্রয়োজন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মানুষের চাহিদা পূরণে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪৬টি নতুন অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খনন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাপেক্স বলছে, এটির আগে নোয়াখালীর এ অঞ্চল তথা বেগমগঞ্জে ১৯৭৬ সালে প্রথম গ্যাস কূপের সন্ধান মেলে, ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় কূপের সন্ধান মিললে সেগুলো খনন করা হয়। তবে পরবর্তীতে ওই দুটি কূপে কোনো গ্যাস পাওয়া যায়নি। ২০১৩ সালে তৃতীয় কূপের সন্ধান মিললে খনন থেকে গ্যাস উৎপাদনে যায় এবং ২০১৮ সালে একই কূপে ওয়ার্কওভার (আক্রমণাত্মক কৌশল) চালিয়ে এখন প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্পের ইনচার্জ ও বাপেক্সের কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে কূপ খননের জন্য ‘ড্রিলিং রিগ’ স্থাপন করা হয়। প্রাথমিকভাবে কূপটি মাটির নিচে ৩ হাজার ২০০ মিটার খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ৪টি জোনে প্রাকৃতিক গ্যাস মিলতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। খনন শেষে প্রতিটি জোনে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। যা বাখরাবাদের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, আজ সকাল থেকে দুই শতাধিক প্রকৌশলী ও শ্রমিক এ কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেছেন। আগামী ১২০ দিন চলবে এ খননের কাজ। বর্তমানে দেশে গ্যাসের যে তীব্র সংকট চলছে, এই সংকটময় মুহূর্তে এই কূপে গ্যাস প্রাপ্তি আশার আলো দেখিয়েছে।
নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ও সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলম বলেন, শুধু অম্বরনগর নয় আমরা সেনবাগ-সোনাইমুড়ীবাসী অনেক আনন্দিত। জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়ে দেশের সমৃদ্ধিতে এই কূপটি ভূমিকা রাখবে। সব মিলিয়ে আমাদের আনন্দের শেষ নেই। তবে এলাকাবাসীর দাবি যেন এলাকায় সংযোগ স্থাপন করা হয়। তাহলে স্থানীয়রা উপকৃত হবে এবং সুফল ভোগ করবে।প্রসঙ্গত, ভারী যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে গঠিত রিগ (খনন যন্ত্র)। এটির খণ্ড খণ্ড অংশ যানবাহনে করে কূপ খননের এলাকায় নিয়ে আসা হয়। এরপর এটি ক্রেন দিয়ে তুলে জোড়া লাগানো হয়। ‘রিগ মাস্ট’ অর্থ হচ্ছে রিগের সবচেয়ে ওপরের ভারী অংশ। এটি শোয়ানো অবস্থায় এনে পরে যেখানে কূপ খনন করা হবে, সেখানে সোজা করে দাঁড় করানো হয়।