আরও ২৪৬ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৫ হাজার ৯৮৯

প্রকাশিত: ৭:১৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২১

করোনাভাইরাস সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৮টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে আরও ২৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যু ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৯৮৯ জন।

আজ সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আগের দিনের তুলনায় আজ করোনায় মৃত্যু ও নতুন রোগী শনাক্ত দুটোই বেড়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৫৩ হাজার ৪৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৯১ শতাংশ। আগের দিন ২৩১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১৪ হাজার ৮৪৪ জন। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব মিলিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৮০ হাজার ৩১৭। মোট মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার ১৬২ জনের। আর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ৮ হাজার ৭৪৮জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ৪৮২জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন ৬৪ জন, খুলনা বিভাগে ৩০ এবং রাজশাহীতে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা অন্যান্য বিভাগের।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ।

এরপর বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ কমবেশি হলেও দুই মাসের বেশি সময় ধরে দেশে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু কয়েক গুণ বেড়েছে। গত জুলাই মাসে দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ১৮২ জনের। প্রায় দেড় বছর ধরে চলা এই মহামারিতে এর আগে কোনো মাসে এত মৃত্যু দেখেনি বাংলাদেশ। এর আগে বেশি মৃত্যু হয়েছিল গত এপ্রিলে ২ হাজার ৪০৪ জনের।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে গত মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ দেশে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ পালন করা হয়। এ সময় সব ধরনের অফিসের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু ২১ জুলাই ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই বিধিনিষেধ আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে আবার দুই সপ্তাহের লকডাউন চলছে।

ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষের শহর থেকে গ্রামে যাওয়া এবং তাদের ফিরে আসায় সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় কারিগরি কমিটি ঈদ ঘিরে বিধিনিষেধ শিথিলের সরকারি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছিল। ঈদের পরে করোনায় মৃত্যু ও রোগী শনাক্ত আগের চেয়ে বেড়েছে।

এর মধ্যে রোববার থেকে তৈরি পোশাকসহ সব ধরনের রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা চালু হয়েছে। গত শুক্রবার কারখানা খোলার ঘোষণা দিলে দেশের নানা প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মানুষ ঢাকার পথ ধরেন। বিধিনিষেধে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ট্রাক, পিকআপভ্যান, অটোরিকশায় গাদাগাদি করেন আসেন শ্রমিকেরা। ফেরিতে গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে পদ্মা পার হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এতে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, রোববার পর্যন্ত বিশ্বে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৯ কোটি ৮০ লাখ ২২ হাজার ৪১ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৪২ লাখ ২৩ হাজার ৪৬০ জনের।

বিশ্বজুড়ে করোনা শনাক্তের তালিকায় এখনও প্রথম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, দ্বিতীয় স্থানে ভারত ও তৃতীয় স্থানে ব্রাজিল।

ডাব্লিউএইচও বলেছে, গত এক সপ্তাহে রোগী শনাক্তের দিক দিয়েও শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (রোববার পর্যন্ত হালনাগাদ) ৫ লাখ ২২ হাজার ৩৩২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২ হাজার ৩৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে (মৃত্যুর তালিকায় সপ্তম)।

সংস্থাটির তথ্যমতে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ব্রাজিলে ৯১০ জনের। এই সময়ে দেশটি রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে (৩৭ হাজার ৫৮২ জন)।

একই সময়ে শনাক্তের তালিকায় প্রথম অবস্থানে থাকা ভারতে মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪০ হাজার ১৩৪ জন, মৃত্যু হয়েছে ৪২২ জনের (চতুর্থ)।