জেলা প্রতিনিধি,রাজশাহীঃ
বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে চলতি এপ্রিল মাসে ১৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের অধিকাংশ শিশু ও কিশোর। সর্বশেষ গত ২৩ এপ্রিল রাজশাহী মহানগরীর শ্যামপুর এলাকার পদ্মা নদীতে পানিতে ডুবে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এক সপ্তাহে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে ডুবে মারা গেছে ৯ জন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বৈশাখ মাসের শুরু থেকে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চল জুড়ে চলছে খরা ও তাপপ্রবাহ। খরা ও দাবদাহে অস্বস্তি থেকে রক্ষা পেতে গোসলে নামছে শিশু ও কিশোররা। সাঁতার না জানা ও অসতর্কতায় শিশু ও কিশোররা প্রাণ হারাচ্ছে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল রাজশাহীর শ্যামপুর ঘাটে পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে তিন কিশোর মারা যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস তাদের লাশ উদ্ধার করে। মৃতরা হলো—কাটাখালী বাখরাবাজ এলাকার রেন্টুর ছেলে যুবরাজ (১২), লিটনের ছেলে আরিফ (১৩) ও নুর ইসলামের ছেলে জামাল (১২)। এর আগে গত ১৪ এপ্রিল রাজশাহীর বাঘায় বিয়েবাড়িতে এসে পানিতে ডুবে মারা যায় শিশু জান্নাত খাতুন (৮)। এখনো আরেক শিশু ঝিলিক খাতুন (১২) নিখোঁজ রয়েছে। এখনো পদ্মায় তার লাশ খুঁজে পায়নি ফায়ার সার্ভিস।
সূত্র মতে, গত ১৯ এপ্রিল রাজশাহীর বাঘার মুর্শিদপুর এলাকায় পদ্মা নদীর খেয়াহাটের ডুবে মারা যায় উপজেলার খায়েরহাট গ্রামের সুজন আলীর ১০ বছরের ছেলে সিয়াম হোসেন সজীব, ২০ এপ্রিল বাঘা উপজেলার পদ্মা নদীতে নৌকায় করে গোসল করতে গিয়ে মারা যান আসাদ হোসেন (১৮)। গত ২১ এপ্রিল পবা উপজেলার পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে মারা যায় বাপ্পি হোসেন (১৬) ও মনির হোসেন (২০)। এর আগে গোসলে নেমে আল আমিন (১২) এবং পুকুরে সাঁতার শিখতে গিয়ে মারা যান রানা মিয়া (২৫)। অন্যদিকে গত ৬ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও ভোলাহাটে পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়। শিবগঞ্জ উপজেলার তর্ত্তিপুরে একজন ও ভোলাহাটের গোহালবাড়ীতে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। মৃতরা হলো শিবগঞ্জের কামারপাড়ার রূপ কুমারের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা (১১), ভোলাহাটের রাধানগর কলোনির সুবোধ মিস্ত্রির ছেলে মো. আজিজুল হক (১১) এবং আব্দুল কাদিরের ছেলে জিহাদ (১১)।
রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সামা বলেন, ‘রাজশাহীতে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে। আমরা ধারণা করছি, গরম থেকে পরিত্রাণ পেতে শিশু ও কিশোররা নদীতে গোসল করতে গিয়ে মারা যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘মৃতদের কেউ কেউ সাঁতার জানলেও অনেকেই সাঁতার জানত না।’ এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় সাঁতার দলের সাবেক কোচ আলমগীর হোসেন জানান, সাঁতার না জানার কারণে দেশে প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যাচ্ছে। শিক্ষার পাশাপাশি শিশুদের সাঁতারও শেখাতে হবে।