গরমে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ৪:৫৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ   

তীব্র গরমের যেসবে শিক্ষার্থী স্কুলের যাচ্ছে না তাদের ব্যাপারে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এসময়ে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের জরিমানা মওকুফ করা হয়েছে। ফাইনাল পরীক্ষার সময় ৮০ শতাংশ উপস্থিতিতে গরমের সময়ের অনুপস্থিতি গণনায় নেওয়া হবে না। এছাড়াও যারা অনুপস্থিত থাকছে তাদের হোম ওয়ার্ক দেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান শেখ রোববার (২৮ এপ্রিল) বলেন, মর্নিং শিফটে প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। ডে শিফটে ৬৫-৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছে। এসময়ে কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে না এলেও তাকে কোনো চাপ দিচ্ছি না। এসময়ে যারা অনুপস্থিত থাকবে তাদের জরিমানা মওকুফ করা হয়েছে।

তিনি জানান, ৮০ শতাংশের কম উপস্থিতি থাকলে ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয় না। কিন্তু তাপমাত্রা স্বাভাবিক না হওয়ার মধ্যের সময়টুকুতে যারা অনুপস্থিত থাকবে তাদের বিশেষ বিবেচনায় নেওয়া হবে। অর্থাৎ তাদের অনুপস্থিত দেখানো হবে না। এছাড়াও অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের কাছে এসময়ের ক্লাসে পড়ানো হোমওয়ার্ক পাঠানো ব্যবস্থা নিয়েছি।

একই বক্তব্য রাজধানীর রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুলেরও। ওই স্কুলের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক বলেন, এই গরমে আমরা কাউকে স্কুলের আসার জন্য চাপ দিচ্ছি না। যারা আসবে তাদের সুরক্ষার জন্য সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে যারা আসবে না তাদের অনুপস্থিত না দেখানো এবং জরিমানা মওকুফ করার একটি নির্দেশনা রয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেবে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর সৈয়দ জাফর আলী বলেন, এসময়টুকু বিশেষ বিবেচনা নেবেন, এমনটাই সবাই আশা করি।তিনি বলেন, এটা প্রশাসন থেকে বলার কিছু নেই। স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজ নিজ ক্ষমতা বলে এটা করতে পারেন। অনেক শিক্ষক এ ব্যাপারে ফোন করে জানতে চেয়েছেন, আমরা সেভাবে বলে দিচ্ছি।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে নতুন তথ্য দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালে আগারগাঁও ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি বা তার বেশি হলে ওই অঞ্চলের স্কুল স্থানীয় প্রশাসন বন্ধ করতে পারবে। তাপমাত্রা সব জেলায় সমান নয়। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, চট্টগ্রামে তাপমাত্রা ৩৫-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেখানে স্কুল বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি হয়নি।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, কিছু হলেই প্রথমেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হবে, এ ধারণা রাখা চলবে না। আমাদের নতুন কারিকুলাম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক; তাই শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে আসা জরুরি। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাস করা যেতে পারে। মন্ত্রণালয়ের এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু মাধ্যমিক পর্যায়ে নতুন কারিকুলামের কারণে অনলাইন ক্লাস নেওয়া সম্ভব না।

তিনি বলেন, শনিবার স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত গরমে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে করা হয়েছে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠলে আবারও মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।তীব্র গরমের কারণে ঈদের ছুটির পর আরও এক সপ্তাহ ছুটি শেষে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হয়েছে আজ রোববার। সকাল থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরিসহ সব প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এজন্য কিছু নির্দেশনা মানতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের। যদিও এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।