মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

প্রকাশিত: ১:১০ অপরাহ্ণ, মে ২, ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্ট: 

যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিসি অব ক্যালিফোর্নিয়া,লস অ্যাঞ্জেলেসে (ইউসিএলএ) আন্দোলনরত ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসরায়েলপন্থী শিক্ষার্থীদের একাংশ এই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটেছে এই হামলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন বিভাগের উপাচার্য মেরি ওসাকো বিবিসিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর ভয়াবহ হামলা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অতিরিক্ত পুলিশ ডাকতে হয়েছে।’

ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা। অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে ক্যাম্পাস চত্বরেই সারাক্ষণ অবস্থান করছেন তারা। ইউসিএলএর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও সেভাবেই ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছিলেন।

প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রোববার গভীর রাতে লাঠিসোটা, বেসবল ব্যাট হাতে সেই সব তাঁবুতে আক্রমণ করে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পেটায় হামলাকারীরা। হামলাকারীদের সবারই মুখে মুখোশ ছিল।

সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে হামলার বিভিন্ন ছবি-ভিডিও ফুটেজ পোস্ট করা হয়েছে। সেসব ছবি=ভিডিও ফুটেজে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের পেটানো, তাদের তাবু তছনছ করা এবং আতশবাজি ফাটানোর মতো ব্যাপার দেখা গেছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে গত মার্চের শেষ দিক থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। সর্বপ্রথম নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বর্তমানে নেতৃত্বও দিচ্ছে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

গতকাল মঙ্গলবার কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের তাঁবু উচ্ছেদ করার সময় পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি-সংঘর্ষ শুরু হয় শিক্ষার্থীদের। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হ্যামিল্টন হল’ ভবন দখল করে।

পুলিশ প্রথমে হ্যামিল্টন হল ত্যাগের জন্য শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানায়। শিক্ষার্থীরা সেই আহ্বানে সাড়া না দিলে পুলিশ সদস্যরা মই জোগাড় করে দোতলার জানালা ভেঙে ভবনের ভেতর প্রবেশ করে। তারপর অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েক জনকে গ্রেপ্তারও করে।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের অভিযান শেষ হওয়ার দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই হামলা ঘটে ইউসিএলএ’র ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের ওপর।

লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতের হামলার পর থেকে ইউসিএলএ ক্যাম্পাসে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।