সিরাজগঞ্জে প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠক, মূলহোতাসহ ৫ প্রিজাইডিং অফিসার গ্রেপ্তার
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জেলা প্রতিনিধি,সিরাজগঞ্জঃ
সিরাজগঞ্জে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে একজন প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠকের অভিযোগে ৫ প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ১০ প্রিজাইডিং অফিসারকে বাতিল করে নতুন ১০ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (৬ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসকের হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- সদর উপজেলার যমুনা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, এসবি রেলওয়ে কলোনী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক আবু সামা, বাহুকা কলেজের প্রভাষক বাচ্চু কুমার ঘোষ, জনতা ব্যাংক সিরাজগঞ্জ জোনাল অফিসের প্রিন্সিপাল অফিসার ইয়াসিন আরাফাত এবং এদের সমন্বয়ক শিয়ালকোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুর ইসলাম।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুর ইসলামকে এ ঘটনার মাষ্টার মাইন্ড বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘রোববার (৫ মে) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার কাদাই এলাকার গার্ডেন প্যালেস রিসোর্টে সদর উপজেলার তালিকাভুক্ত কতিপয় প্রিজাইডিং অফিসার সদর উপজেলার একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য গোপন বৈঠক করছেন।’
জেলা প্রশাসক জানান, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন অফিসের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে কাউকে না পাওয়া গেলেও ওই স্থানের সিসিটিভির ফুটেজ ও ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে থানায় নিয়ে আসা হয়।এ সময় পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, ‘এ ঘটনায় সোমবার দিনভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৫ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও এদের মাষ্টার মাইন্ড সহকারী শিক্ষক আমিনুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। তবে কোন প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠক করা হচ্ছিল সে বিষয়টি আরো তদন্তের পর জানানো হবে বলে জানান তিনি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় ১৭১টি কেন্দ্র রয়েছে। এ ঘটনার পর ইতোমধ্যে ১০ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে বদল করে নতুন ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ৮ মে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- এস এম নাসিম রেজা নুর (মোটরসাইকেল), তিনি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, মো. নুরুল ইসলাম সজল (কাপ-পিরিচ), তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন (আনারস), তিনি সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, রাশেদ ইউসুফ জুয়েল (দোয়াত কলম), তিনি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ভাতিজা এবং এস এম আহসান হাবিব (ঘোড়া), তিনি জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।