এটাই কি তবে বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দল

প্রকাশিত: ৫:১৮ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২৪

খেলাধুলা ডেস্ক:

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজটি মোটাদাগে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির মঞ্চ। প্রস্তুতি তাদেরকে নিয়েই করছে, যাদের যাওয়ার কথা বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে। টাইগারদের সহকারী কোচ নিক পোথাস তৃতীয় ম্যাচের আগে জানিয়েছিলেন, এই দল আগে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায়, এরপরেই হবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। পরীক্ষার সেই দলটাও চলে এসেছে। সিরিজের শেষ দুই ম্যাচের জন্য ঘোষিত দলে ফিরেছেন মুস্তাফিজুর রহমান, সাকিব আল হাসান এবং সৌম্য সরকার।

এরইসঙ্গে সম্ভবত বিশ্বকাপের দল কেমন হবে সেই আভাসটাও দিয়ে ফেলেছেন জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেল। বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশের স্কোয়াড অবশ্য আগেই চলে গেছে আইসিসির টেবিলে। ১ মে ছিল আইসিসিকে নাম জমা দেওয়ার শেষদিন। সেই রীতি মেনে আইসিসির হাতে আছে বাংলাদেশ দল।

যদিও সেই দলে কারা আছেন তা প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ। ধারণা করা হচ্ছে, জিম্বাবুয়ে সিরিজের পরেই দল ঘোষণা করা হবে। তবে এর আগে যেমন আভাস মিলেছে, তাতে একটা উপসংহারে আসাই যায়।

সৌম্য সরকারকে বলা চলে এই দলের মিসিং পাজল। তিনি ফিট হবেন কি না সেটা ছিল বড় প্রশ্ন। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের প্রিয় শিষ্য তিনি। নিউজিল্যান্ড সিরিজে ১৬৯ রানের দুর্র্ধষ এক ইনিংস খেলেছিলেন। পরে বিপিএলেও ফরচুন বরিশালের শিরোপাজয়ে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। অলরাউন্ডার সৌম্যকে পাওয়া নিয়ে তাই প্রশ্ন ছিল।

কিন্তু জিম্বাবুয়ের সিরিজের দুই ম্যাচের জন্য তিনি দলে ফিরেছেন। গতকাল চট্টগ্রামে অনুশীলনে সাবলীল ছিলেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। তাই বিশ্বকাপের জন্য তিনি যে ফিট হচ্ছেন, তা একপ্রকার নিশ্চিত।

জাতীয় দলে টি-টোয়েন্টির দক্ষ ফিনিশারের সংকট ছিল দীর্ঘদিন ধরে। সেই নাসির হোসেন থেকে শুরু করে অনেককেই আনা হয়েছে ফিনিশারের বিবেচনায়। ইয়াসির রাব্বি, আফিফ হোসেন ধ্রুব বা শামীম পাটোয়ারীকেও বিবেচনা করা হয়েছিল। তবে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন সবাই। সেই হিসেবে এবার বিশ্বকাপের আগে আচমকাই দুজন ফিনিশার পেয়েছে বাংলাদেশ।

রিশাদ হোসেন ও জাকের আলী অনিক নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি। রিশাদ হোসেন খেলতে পারবেন বিশেষজ্ঞ লেগ স্পিনার হিসেবেও। বাংলাদেশ দলে লেগ স্পিনার সংকট দীর্ঘদিন ধরেই। অথচ বিশ্ব ক্রিকেটে অন্তত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে লেগস্পিনার যেন আবশ্যক। পাকিস্তানি কোচ মুশতাক আহমেদের সান্নিধ্যে রিশাদের বোলিং ধার বাড়বে– এমন প্রত্যাশা করাও হয়ত অমূলক না।

অলরাউন্ডার হিসেবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও নিজেদের প্রমাণ করেছেন বিপিএলে। সাইফউদ্দিন ফিরেছেন দীর্ঘ দেড় বছর পর। রিয়াদ তো জাতীয় দলের দুঃসময়ের কাণ্ডারি। কাঁচাপাকা দাঁড়ির রিয়াদ এবারের বিশ্বকাপেও যে টাইগার ক্রিকেটের বড় ভরসা, সেটা অনায়াসে বলা যায়। সাইফউদ্দিন-রিয়াদের বিশ্বকাপ যাত্রা নিশ্চিত ধরে নেওয়াই যায়।

ওপেনার হিসেবে তানজিদ হাসান তামিমের যাত্রাটা বলতে গেলে শুরু হয়েছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে। সেবার নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন ইমার্জিং এশিয়া কাপ থেকে। সেই জুনিয়র তামিম এবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন বিপিএলে। জিম্বাবুয়ে সিরিজ আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডে তার বিশ্বকাপ যাত্রার জন্য যথেষ্ট।

সাকিব আল হাসান ফিরেছেন। মুস্তাফিজ আইপিএলে ঝড় তুলেছেন। তাওহিদ হৃদয় ব্যাট হাতে আর তাসকিন শরিফুলরা বল হাতে আছে দারুণ ছন্দে। এদের ছাড়া বিশ্বকাপ দল যেন অপূর্ণ!

বিশ্বকাপের দল কেমন হবে সেই আভাস অবশ্য আগেই দিয়েছিলেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত। বিশ্বকাপ দল প্রসঙ্গে শান্ত বলেছিলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে সিরিজটা খেলেছি, আর এই সিরিজে যে দলটা আছে। বিশ্বকাপে বেশির ভাগ খেলোয়াড় এখান থেকে যাবে। যদি সবাই সুস্থ থাকে। হ্যাঁ, দুই-একজন এদিক–ওদিক হতে পারে। তবে বেশির ভাগই এখান থেকে যাবে।’

উৎসুক ক্রিকেট ভক্তরা তাই এবার দুইয়ে-দুইয়ে চার মিলিয়ে বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশের স্কোয়াড নিজে থেকেই সাজিয়ে নিতে পারেন। যারা বাংলাদেশের জার্সিতে খেলবেন বিশ্বক্রিকেটের জমজমাট এই আসর।