মোঃ সাইফুল ইসলামঃ
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এক কেজি চালও আমদানি করতে হয়নি, বরং চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি হয়েছে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘এখন আমরা অনায়াসে ৫-৭ লাখ টন চাল রফতানি করতে পারি, সে অবস্থা হয়েছে। আমাদের শুধু পলিশ করে যে চাল নষ্ট হচ্ছে, সেটা অর্ধেক করলেই হবে। কারণ চাল পলিশ করার কারণে উৎপাদিত প্রায় ৪ কোটি টনের মধ্যে তিন শতাংশ হারে প্রায় ১২ লাখ টন অপচয় হচ্ছে। দেশে পাঁচ দফায় পলিশ করে চাল চকচকে করা হচ্ছে। দুবার পলিশ করলেও ৫-৭ লাখ টন চাল বাড়বে।’
বৃহস্পতিবার (৯ মে) ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) একটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, ‘দফায় দফায় পলিশ করার পর চালের মধ্যে শুধু কার্বোহাইড্রেট ছাড়া অন্য কোনও পুষ্টি থাকছে না। এতে খরচ হচ্ছে বিদ্যুৎ, শ্রমিকের মজুরি সবকিছু মিলে প্রতি কেজিতে প্রায় চার টাকা। যে ভার ভোক্তাকে বহন করতে হচ্ছে। চালের দামে এ খরচ যুক্ত হচ্ছে।’
সরকার নতুন আইন করে চালের পলিশ করা বন্ধ করছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মিনিকেট বা বিভিন্ন নামে চাল বাজারজাত করাও বন্ধ করেছি। ভোক্তাদের আমি বলবো, আপনারা চকচকে চাল খাওয়া বন্ধ করুন। তাহলে যেমন চালের দাম কমবে, আমরা চাল রফতানি করতেও সফল হবো। এ আইন কার্যকর হওয়ার পর আগামী আমন মৌসুম থেকে চাল পলিশ করলে মিল মালিকরা জরিমানার শিকার হবেন। আসুন সবার প্রচেষ্টায় আমরা চাল রফতানির প্রস্তুতি নেই।’
এদিকে দেশে এক আঙিনায় খাদ্য, কৃষি যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও স্বাস্থ্য পর্যটন নিয়ে ওই আটটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ এর আয়োজনে তিন দিনের এ আয়োজন চলবে শনিবার পর্যন্ত। খাদ্যমন্ত্রী এ সব প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন এবং বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
একযোগে শুরু হওয়া এ সব প্রদর্শনী হচ্ছে, সপ্তম ফুড বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, চতুর্থ ফুড প্যাক এক্সপো, সপ্তম অ্যাগ্রো বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো এবং সপ্তম পোল্ট্রি অ্যান্ড লাইভস্টক বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ১৫তম মেডিটেক্স বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ১০তম ফার্মা বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, অষ্টম বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল ল্যাব এক্সপো এবং সপ্তম ইন্টারন্যাশনাল হেলথ ট্যুরিজম অ্যান্ড সার্ভিসেস এক্সপো বাংলাদেশ।
কৃষি ও প্লাস্টিক শিল্প জগতের অত্যাধুনিক সরঞ্জাম, উন্নত প্রযুক্তি, পণ্য এবং পরিষেবা বিষয়ক এ প্রদর্শনীগুলোতে বাংলাদেশ, তুর্কিয়ে, ভারত, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা ও চীনসহ ১৫টিরও বেশি দেশের প্রায় ১০০টি কোম্পানি অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ও সেবা নিয়ে স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান, দেশি-বিদেশি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের সহযোগিতা বিষয়ক এ প্রদর্শনীগুলোতে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, তুর্কিয়ে, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও শ্রীলংকাসহ ১৫টিরও বেশি দেশের প্রায় ১১২টি কোম্পানি অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ।৯ মে থেকে ১১ মে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ব্যবসা সংশ্লিষ্ট দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শনীগুলো উন্মুক্ত থাকবে।