আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্টঃ
অবশেষে ১০ বছর পর জানা গেল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন সংবাদ সম্মেলন করেন না। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাত্কার দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী সেই কারণগুলো ব্যাখ্যা করেছেন। যার মূল কথা, আজকের মিডিয়া নিরপেক্ষ নয়।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের হিন্দি ভাষার সংবাদভিত্তিক চ্যানেল আজ তককে দেওয়া সাক্ষাত্কারে প্রধানমন্ত্রী মোদি জানান, সংবাদমাধ্যম এখন এক অন্য পথে ব্যবহূত হচ্ছে, সেই পথে তিনি যেতে চান না। তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। আমি দরিদ্র মানুষের বাড়ি যেতে চাই। আমি বিজ্ঞান ভবনের ফিতে কেটে ছবি তুলতেই পারি, কিন্তু আমি তা করি না। আমি ঝাড়খন্ডের একটা ছোট্ট গ্রামে চলে যাই, সেখানে ছোট প্রকল্পের কাজ করি।’
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘আমি এক নতুন কর্মসংস্কৃতি এনেছি, মিডিয়ারতা পছন্দ হলে বলবে, না হলে বলবে না।’ এরপর তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যম এখন আর কোনো আলাদা সত্তা নয়। আগে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র উপায় ছিল সংবাদমাধ্যম। কিন্তু এখন সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে তাকে ছাড়াই সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। তাছাড়া মোদির মতে, তিনি পার্লামেন্টের কাছে দায়বদ্ধ, অন্য কারো কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নন। মোদি বলেন, সাংবাদিকেরা প্রত্যেকেই নিজস্ব অভিমতের মধ্যে আবদ্ধ। নিরপেক্ষতা বলে যে বিষয়টা ছিল, পক্ষপাতহীনতা ছিল, আজ তা আর নেই। আজ কাউকে সাক্ষাত্কার দিতে বসলেই সবাই জেনে যায় অমুক গত পরশু ওই বিষয়ে টুইট করেছিল। সে তো মোদিকে টেনেই কথা বলবে।
প্রধানমন্ত্রী তার সাক্ষাত্কারে অতীতের ইতিহাসও তুলে ধরেছেন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন কী করতেন জানিয়ে বলেন, ‘সে সময় জনসভায় গিয়ে জনতাকে জিগ্যেস করতাম, কী ভাই, কেউ কালো পতাকা দেখাচ্ছে না কেন? দুই-চারটি কালো পতাকা তো রাখবে। যা দেখে খবরের কাগজ লিখবে, মোদি এসেছিলেন। ১০ জন তাকে কালো পতাকা দেখিয়েছে। না হলে জনতা বুঝবে কী করে যে মোদি এসেছিলেন? কালো পতাকা ছাড়া আমার সভাকে কে গুরুত্ব দেবে?
মোদি একটি কাহিনির কথাও বলেন। তিনি জানান, ‘গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন এক দিন এক গ্রামের লোকজন দেখা করতে এল। সে সময় প্রতি মঙ্গলবার যে কেউ আমার কাছে চলে আসতে পারত। ঐ দিন সবার জন্য ছিল অবারিত দ্বার। গ্রামবাসীরা বলল, আপনাকে অভিনন্দন জানাতে এসেছি। কারণ, আমাদের গ্রামে সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুত্ চলে এসেছে। গ্রামে এখন ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুত্ থাকে। আমি বলি, হতেই পারে না। মিথ্যা বলছ তোমরা। শুনে ওরা বলল, না সাহেব। সত্যি। আমি বলি, কই কোনো কাগজে তো এই খবর পড়িনি? শুনে ওরা বলল, সাহেব, রেডিও বা খবরের কাগজে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুত্ চলে আসার খবর দেবে না।’ —হিন্দুস্তান টাইমস, জি নিউজ ও ইন্ডিয়া টুডে