পরীক্ষার সুযোগ চেয়ে রাবির দর্শন বিভাগে তালা, আমরণ অনশন
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
সাজ্জাদ হোসেন:
পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ চেয়ে বিভাগে তালা ঝুলিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দর্শন বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ডিস-কলেজিয়েট শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ একাডেমিক ভবনে অবস্থিত দর্শন বিভাগে তালা ঝোলানোর পাশাপাশি আমরণ অনশন কর্মসূচিও পালন করেন তারা। পরবর্তীতে বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাসে এদিন দুপুরে আন্দোলন থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘আমরণ অনশন চলবেই’, ‘যে কোনো উপায়ে পরীক্ষা দিতে চাই’, ‘মরব নয়তো পরীক্ষা দিব’, ‘তিন বছরের ক্ষতির দায় কে নিবে?’, ‘বিগত বছরগুলোতে অর্ডিন্যান্স কোথায় ছিল?’, ‘পরীক্ষা দিতে না পারলে ট্যুরে নেওয়া হলো কেন?’ সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে অংশগ্রহণ করেন।
জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে দর্শন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ক্লাস শেষ হয়েছে। এতে ১১১জন শিক্ষার্থীর মধ্যে কলেজিয়েট হয়েছেন ১০ জন, নন-কলেজিয়েট ৬৮ জন এবং ডিস-কলেজিয়েট ৩৩ জন। গত ২৬মে থেকে ৬জুন পর্যন্ত তাদের ফরম পূরণের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
কর্মসূচির বিষয়ে ডিস-কলেজিয়েট শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিগত সময়ে ডিস-কলেজিয়েট হয়েও বিশেষ বিবেচনায় অনেকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পেয়েছে। বিভিন্ন কারণে আমরা ৬০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিতি থাকতে পারিনি। সেজন্য আমরা ভুল স্বীকার করেছি। তবুও আমরা পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাচ্ছি না। আমাদের ক্ষেত্রেও বিশেষ বিবেচনা করা হোক অথবা পরীক্ষার সময় পিছিয়ে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে কলেজিয়েট হওয়ার সুযোগ দেয়া হোক। কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ নেই। আমরা একটা সুযোগ চাই। তাছাড়া আমরা আড়াই বছর পিছিয়ে যাব।
জানতে চাইলে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার রবিন বলেন, বিগত বছরগুলোতে দেখা যায় উপস্থিতি কম থাকা সত্ত্বেও অনেকে পরীক্ষা দিতে পেরেছে। কিন্তু আমাদের প্রায় ৬০ শতাংশ উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও আমরা পরীক্ষা দিতে পারছি না। আমাদের সঙ্গে এটা অন্যায় করা হচ্ছে।
কর্মসূচিতে কলেজিয়েট এক শিক্ষার্থী তাদের বন্ধুদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে বলেন, বন্ধুদের কারো মা-বাবা মারা গেছে, কেউ পারিবারিক সমস্যায় থাকার কারণেই ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। আমরা চাই আমাদের সকল বন্ধু-বান্ধব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুক।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুসারে, ক্লাসে কোনো শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ৭৫ শতাংশ হলে কলেজিয়েট, ৬০ শতাংশের ওপরে নন-কলেজিয়েট এবং ৬০ শতাংশের নিচে ডিস-কলেজিয়েট হিসেবে গণ্য হয়। এক্ষেত্রে নন-কলেজিয়েটরা জরিমানা দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেলেও ডিস-কলেজিয়েট শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। ফলে পরের বছর তাদের এই শর্ত পূরণ করেই পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নিলুফার আহমেদ বলেন, আমরা এ বিষয়টা পরে বসে সিদ্ধান্ত নেব। এখন আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।