সরকার গঠনের কৌশল ঠিক করতে বৈঠকে ইনডিয়া জোট

প্রকাশিত: ৮:৪৬ অপরাহ্ণ, জুন ৫, ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর সরকার গঠনের সম্ভাব্য কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসেছেন দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইনডিয়া জোটের নেতারা। বুধবার নয়াদিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গের বাসভবনে জোটের নেতাদের ওই বৈঠক শুরু হয়েছে। বৈঠকে যোগ দিতে কংগ্রেস সভাপতির বাসভবনে পৌঁছেছেন জোটের অনেক নেতা।
কংগ্রেস সংসদীয় পার্টির চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীও বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের কৌশল নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকের আগেই চাচা রাম গোপাল যাদবকে সাথে নিয়ে খার্গের বাসভবনে পৌঁছেছেন উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির (এসপি) প্রধান অখিলেশ যাদব।
কংগ্রেস নেতা কেসি ভেনুগোপাল, জেএমএমের সাংসদ ও ঝাড়খণ্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের স্ত্রী কল্পনা সরেন, বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা এনকে প্রেমচন্দ্রও বৈঠক স্থলে পৌঁছেছেন। দেশটির বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গের বাসভবনের বাইরে দলের নেতা রাহুল গান্ধীর সমর্থনে কর্মীদের স্লোগান দিতে শোনা গেছে। বৈঠকের আগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সরেন বলেছেন, ‌‌‘‘আমরা জোট হিসাবে আমাদের কৌশল নির্ধারণ করব।’’
আম আদমি পার্টির (এএপি) সাংসদ রাঘব চাড্ডা ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবকেও খার্গের বাসভবনে দেখা গেছে। এএনআই-কে তেজস্বী বলেছেন, এনডিএর সংখ্যা আছে, কিন্তু আমরা চাই যে সরকার গঠন করা হবে তারা যেন বিহারের দিকে খেয়াল রাখে। বিহার যেন বিশেষ মর্যাদা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। এটি নীতিশ কুমারের জন্য একটি ভালো সুযোগ। তিনি ‘কিংমেকার’ হতে পারেন। বিহারের বিশেষ মর্যাদা তিনিই নিশ্চিত করতে পারবেন।

এদিকে, একই দিনে দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পাশে হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে দেশটির বর্তমানে আলোচিত দুই রাজনৈতিক দলের নেতা বিহারের নীতিশ কুমার ও অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুকে।
মঙ্গলবার ভারতের ৫৪৩ আসনের লোকসভার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এই নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। দেশটিতে সরকার গঠনের জন্য ২৭২ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন হলেও বিজেপি এককভাবে ২৪০ আসন পেয়েছে।

এখন সরকার গঠনের জন্য এনডিএ জোটের শরীকদের ৫৩ আসনের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে বিজেপিকে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ২৯৩ আসনে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে, দেশটির বিরোধীদল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইনডিয়া ২৩৩ আসন পেয়েছে। এর মধ্যে কংগ্রেস এককভাবে পেয়েছে ৯৯ আসন।
লোকসভা আসন সংখ্যার হিসাব অনুযায়ী, সব কিছু ঠিক থাকলে কেন্দ্রে সরকার গড়বে এনডিএ। যদিও নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের একদিন পর দিল্লিতে এখন চলছে মেরুকরণের খেলা। সরকার ভাঙতে-গড়তে তৎপর হয়ে উঠেছে দু’পক্ষই।

এবারের নির্বাচনে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। যে কারণে দলটিকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এনডিএ জোটের অংশীদার অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি ও বিহারের নীতিশ কুমারের জনতা দলের (সংযুক্ত) ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। লোকসভায় ২৮টি আসন পাওয়ায় তেলেগু দেশমের নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু ও জনতা দলের নীতিশ কুমারকে ‘কিংমেকার’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।