জামায়াত নিষিদ্ধ প্রক্রিয়া: কওমি আলেমদের পাশে চায় সরকার

প্রকাশিত: ১:১৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২৪

২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সরকারি স্বীকৃতির দিনে গণভবনে আলেমদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী (ছবিতে থাকা আহমদ শফী, মাওলানা আশরাফ আলী প্রয়াত হয়েছেন)

নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ ও পরবর্তী প্রভাব নিয়ে কওমি মাদ্রাসার আলেমদের পাশে চায় সরকার। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে কওমি মাদ্রাসার শীর্ষ আলেমদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যেতে পারেন শীর্ষ আলেমরা। এই উদ্যোদের অংশ হিসাবে আজ বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সরকারি বাসভবনে আলেমদের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে।

ইসলামী ঐক্যজোটের একজন প্রভাবশালী নেতা মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জানান, তাদের দলের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসনাত, মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আলতাফ হোসাইন যেতে পারেন।

তিনি উল্লেখ করেন, দেশের বরেণ্য আলেমরা গণভবনে যাচ্ছেন। ধর্মমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি আলোচনায় থাকতে পারে।

এ ব্যাপারে হেফাজত নেতা মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী বলেন, ‘আলেমদের সঙ্গে সরকারের আলোচনা হওয়ার কথা আমি শুনেছি। তবে বৈঠক ধর্মমন্ত্রীর বাসায় নাকি গণভবনে সেটা আমি জানি না।’

জানতে চাইলে হেফাজতে ইসলামের প্রভাবশালী নেতা মাওলানা আজিজুল হক ইসলাবাদী জানান, তিনি এ ধরনের বৈঠকের কথা জানেন না।

একাধিক দলের নেতা এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে উল্লেখ করেন, জামায়াতের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানোর লক্ষ্য আছে। মতাদর্শিকভাবেও দলটির সঙ্গে কওমি মাদ্রাসা ও সংশ্লিষ্টদের পার্থক্য রয়েছে। বিষয়টিকে কাজে লাগাতে পারে সরকার।

একইসঙ্গে ধর্মভিত্তিক দল হওয়ায় ‘জামায়াত নিষিদ্ধের প্রভাব ও দলটির অনুসারীদের বিষয়ে সম্ভাব্য মতামত’ নিয়েও সরকারের উচ্চপর্যায়ে আগ্রহ রয়েছে।

সোমবার (২৯ জুলাই) ১৪ দলীয় বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর সরকারের নির্বাহী আদেশে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা এসেছে গতকাল মঙ্গলবার।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই সরকারের পতনের জন্য ডানবাম ও ইসলামি দলগুলোকে আহ্বান জানায় বিএনপি। এরপর ২৯ জুলাই ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে ‘রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে সরকারের পতনের একদফা দাবি নিয়ে ঐকমত্য রয়েছে’ বলে জানানো হয়। যদিও অন্য কোনও কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক দল এ বিষয়ে অবস্থান প্রকাশ করেনি।

একাধিক আলেম এ প্রতিবেদককে জানান, জামায়াতের আদর্শের সঙ্গে কওমি মাদ্রাসার আলেমদের পার্থক্যের বিষয়টি অনেক পুরোনো। দলটির মূল প্রতিষ্ঠাতা আবুল আলা মওদুদীর নানা দর্শনের বিরোধিতা করে ‘ফতোয়া’ দিয়েছেন কওমি আলেমরা। বিভিন্ন গ্রন্থও রচনা করেছেন অনেক আলেম।

এই আলেমদের মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানের কওমি আলেমরাও রয়েছেন বলে বিভিন্ন গ্রন্থে উল্লেখ আছে।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে একটি ইসলামি দলের নেতা জানান, মুফতি রুহুল আমিন, হেফাজতের আমির বা মহাসচিব, বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতা, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একাধিক আলেম ও নেতা গণভবনে যেতে পারেন।