সেলিনা আক্তার:
গণঅভ্যুত্থানে দেশে রেমিট্যান্স আসা থমকে যায়। তবে সরকার পতনের পর থেকে দেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসার গতি বাড়তে শুরু করেছে। আগস্টের প্রথম ১০ দিনে দেশে বৈধ পথে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ৪৮ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।
সোমবার (১২ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে সংঘাত-সংঘর্ষ, কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধের প্রেক্ষাপটে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাবে না বলে হুমকি দেন প্রবাসীরা। আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিকে কথা বলে প্রতিবাদ হিসাবে দেশে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন করেন অনেক প্রবাসী। যার প্রভাব পড়েছিল প্রবাসী আয়ে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে ১৯০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা ছিল গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এছাড়া চলতি বছরের জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ৬৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার।
এদিকে ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এরপর আবার দেশ গঠনে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এর ফলে আবারও প্রবাসী আয় এখন বাড়তে শুরু করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব শেষ তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে অর্থাৎ ৩ আগস্ট পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি ৫৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার। পরের সপ্তাহে অর্থাৎ ৪ থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে প্রথম সপ্তাহের চেয়ে চারগুণ বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা। আলোচ্য সময়ে প্রবাসীরা ৩৮ কোটি ৭১ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠায়।
দেশে ১০ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪ কোটি ৪৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৬০ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪২ কোটি ৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ, নভেম্বর ১৯৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ, জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চ মাসে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিলে এসেছে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে এসেছে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ এবং জুন মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।