ঢাকা মেডিক্যালে ঢাবি শিক্ষার্থীসহ তিন দালাল আটক

প্রকাশিত: ১১:৪৭ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০২৩

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের মেডিসিন বিভাগ থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীসহ একটি  ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তিন দালালকে আটক করা হয়েছে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে  শাহবাগ থানায় একজনকে হস্তান্তর করা হলেও মুচলেকা রেখে  ঢাবির শিক্ষার্থীসহ দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরা হলেন- মো. মাহফুজার রহমান (মুন), মো. সবুজ ভূঁইয়া ও বিপুল মিয়া (নাহিদ)। এদের মধ্যে মাহফুজার রহমান (মুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী। আজ রোববার (৪ জুন) বিকেলে বিষয়টি অনলাইন বাংলা নিউজ পোর্টাল নিউজ পোস্ট বিডি ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক।

হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নিউজ পোস্ট বিডি ডটকমকে বলেন, হাসপাতাল পরিচালকের নির্দেশে ঢামেক হাসপাতাল থেকে দালালচক্র নির্মূলে আমরা প্রতিনিয়তই অভিযান চালাই। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রোববার (৪ জুন) দুপুরের দিকে নতুন ভবনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অভিযানে যাই। তখন দালালচক্রের এক সদস্যকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করি। এতে ওই দালাল আমাদের ওপর তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ফোনে আরো কয়েকজনকে ডেকে আনেন। আমরা তাৎক্ষণিক বিষয়টি হাসপাতাল পরিচালককে অবহিত করি। পরে আমরা তাকে আটক করে পরিচালকের দপ্তরে পাঠিয়ে দিই। এরপর বিকেল ৫ টার দিকে ঢাকা মেডিক্যালের নতুন ভবনের মেডিসিন ওয়ার্ডে অভিযান চালিয়ে আরও দুই জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতাল পরিচাল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক নিউজ পোস্ট বিডি ডটকমকে বলেন, ঢাকা মেডিকেলের নতুন ভবনের মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তিন দালালকে আমরা আটক করি। আমি জানতে পেরেছি তারা দালাল হয়ে কাজ করে। আজ নতুন ভবনের নিচতলায় আমাদের  স্টাফদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সেটি হাতাহাতিতে পৌঁছায়। পরে আমাদের পুলিশের ইনচার্জ ও আনসার সদস্যরা তাদের তিনজনকে আটক করে প্রশাসনিক ব্লকে নিয়ে আসে।

তিনি বলেন, এদের মধ্যে মাহফুজার রহমান মুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। এটি জানতে পেরে আমরা ঢাবির প্রক্টরকে খবর দেই। তিনি এসে মুচলেকা দিয়ে মুন ও নাহিদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।আমরা নিজস্বভাবে বিষয়টি তদন্ত করে জানতে পারি সবুজ ভূঁইয়া হাসপাতালের বাইরে একটি বেসরকারি প্যাথলজি বিভাগের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেন। তার দায়িত্ব আমাদের হাসপাতাল থেকে রোগীদের ভাগিয়ে নিয়ে তার প্যাথলজিতে পরীক্ষা করানো। এর বিনিময়ে তিনি অর্থ আয় করেন। আইনি ব্যবস্থা নিতে আমরা তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করেছি।

ঢামেক পরিচালক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক আরও বলেন, হাসপাতাল থেকে দালাল নির্মূলের জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। হাসপাতালে দালাল প্রবেশে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর যদি কোনো গাফিলতি থাকে, এমন প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি হাসপাতালে অতিরিক্ত ভিজিটর ঠেকাতে নতুন কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। কারণ, অতিরিক্ত ভিজিটরের কারণে দালালরা তাদের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। হাসপাতালে ভিজিটর থাকার জন্য কার্ড আছে। এটা আরও কীভাবে প্রসারিত করা যায়, সেটা নিয়ে কাজ চলছে।

হাসপাতাল পরিচালক বলেন, এর আগে গাইনি ওয়ার্ডে অভিযান পরিচালনা করে চারজনকে আটক করে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করেছি। আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিন অভিযান অব্যাহত থাকবে।