নিজস্ব প্রতিবেদক:
দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরলেন সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমান। একই সঙ্গে বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টনও দেশে ফিরেন। আজ রোববার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তারা।
সাংবাদিক শফিক রেহমান আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৮ সালে দেশ ছাড়েন। দীর্ঘ ৬ বছর পর দেশে ফিরলেন তিনি। শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রেহমানও সঙ্গে ছিলেন। এ সময় বিমানবন্দরে তাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সাংবাদিক নেতারা এবং বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে সহকর্মীদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শফিক রেহমান।
সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, সরদার ফরিদ আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, আলফাজ আনাম, যায়যায় দিনের সাংবাদিক মাহবুব আলম, শাহীন চৌধুরী, ফেরদৌস মামুন, অধ্যাপক খান মনোয়ারুল ইসলাম, ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ, বিএনপি নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিম (সিআইপি), যুবদল নেতা কৃষিবিদ সানোয়ার আলম, ছাত্রদলের সাবেক নেতা জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, রাশিদুল ইসলাম রিপন, বিএনপি নেতা আশরাফ শিকদার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রাশেদ রহমান, ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম তারিকসহ অসংখ্য নেতাকর্মী। আরও উপস্থিত ছিলেন শফিক রেহমান প্রত্যাবর্তন কমিটির সদস্য সজীব ওনাসিস, জাহিদুল ইসলাম রনি, রাজীব আহসান চৌধুরী পাপ্পু ও হাসানুর রহমান।
শফিক রেহমান বলেন, দেশে ফিরে শেখ হাসিনাকে খুব অনুভব করছি। তার পিতা ও তাকে উপাধি দিয়েছি; একজন বীর পলাতক শ্রেষ্ঠ ও বীর পলাতক উত্তম। আমি তার মৃত্যুদণ্ড চাই না। মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে। সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা। আমি একাত্তরে দেশে ফিরতে পারিনি। এবার দেশে ফিরলাম। দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার অবদান বলে শেষ করা যাবে না। এবারের আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদেরকে পুনর্বাসন করতে হবে।
মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন বলেন, দীর্ঘদিন পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশে ফিরেছি। এটা আন্দদদায়ক খবর।
জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে ডিবির পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন থানায় মামলা করেন। দণ্ডবিধির ৩০৭ এবং ১২০-বি ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলার আসামি শফিক রেহমান ও মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন।
পরবর্তীতে সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশ। মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন ও তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার।
সূত্র জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যাচেষ্টা ষড়যন্ত্রের নির্দেশদাতা হিসেবে শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। আরেকজন আসামি মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টনের বিরুদ্ধে অর্থায়ন ও পরামর্শদাতার অভিযোগ আনা হয়েছে। মোহাম্মদ উল্লাহর বিরুদ্ধে পরামর্শদাতার অভিযোগ আনে পুলিশ। মোহাম্মদ উল্লাহর ছেলে রিজভী আহাম্মেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের কাছ থেকে সজীব ওয়াজেদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে অন্য আসামিদের কাছে সেই তথ্য সরবরাহ করেন।