ফেনীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৪৫ পরিবারকে অর্থ সহায়তা

প্রকাশিত: ১:১০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪

ফেনী প্রতিনিধি:

ফেনীর সদরের কাজিরবাগ ইউনিয়নের সোনাপুর ও মধ্য কাজিরবাগ গ্রামের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৪৫টি পরিবারকে নগদ অর্থসহায়তা করা হয়েছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ‘হৃদয়ে ৮৮’ এবং ‘চ্যানেল হৃদয়ে ৮৮’- এর যৌথ উদ্যোগে প্রতি পরিবারকে ২০০০ টাকা করে নগদ অর্থ দেওয়া হয়। এছাড়াও ৫০টি পরিবারকে এনএফআই (ঘড়হ-ঋড়ড়ফ ওঃবসং) কিট হস্তান্তর করা হয়।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করার উদ্যোগটি একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা, যেখানে দেশে-বিদেশে ‘হৃদয়ে ৮৮’- এর সদস্যরা এই কাজের জন্য অর্থ যোগানের ক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও স্থানীয় কাজিরবাগ ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা, সোনাপুর জামে মসজিদ মাদ্রাসার নেত্রীরা ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন।
অর্থ সহায়তার ক্ষেত্রে শুরু থেকে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। বিভিন্ন সংস্থা ও পত্রিকার সংবাদের উপর ভিত্তি করে প্রাথমিক সিচুয়েশন রিপোর্ট তৈরি করা হয়। ‘হৃদয়ে ৮৮’ বিভিন্ন টিমে বিভক্ত হয়ে মাঠপর্যায়ে সরেজমিনে খানা পরিদর্শনপূর্বক বেনিফিশিয়ারি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। যার ভিত্তিতে আইডি কার্ড ও মাস্টারবোর্ড প্রস্তুত করে স্থানীয় হোল্ডার কমিটির সহায়তায় সোনাপুর জামে মসজিদ মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে দুটি বুথের মাধ্যমে ত্রাণসামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

প্রতিটি খানায় নারীদের নাম রেজিস্ট্রেশন করা হয়, কিন্তু অসুস্থ বা সমস্যায় থাকা নারীদের ক্ষেত্রে তার নমিনি হিসেবে স্বামী কিংবা সন্তানদের ত্রাণ সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হয়। নারী-পুরুষদের জন্য আলাদা লাইন তৈরি করা হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি রেজিস্ট্রেশন কার্ডের তথ্য অনুযায়ী মাস্টার রোলে নিবন্ধনের মাধ্যমে স্বাক্ষর কিংবা টিপসই সহকারে তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে সম্পাদন করা হয়।
‘হৃদয়ে ৮৮’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে প্রশংসা অর্জন করেছে। ত্রাণ ও নগদ অর্থ গ্রহণ করতে আসা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা জানান, বন্যার শুরুর দিকে একটি সংস্থা তাদের শুকনো খাবার সংগ্রহ করে। এরপর ‘হৃদয়ে ৮৮’ সংগঠনের নগদ অর্থ প্রদান করে।

ত্রাণ বিতরণের সময় বক্তারা বলেন, এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ দুর্যোগগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর প্রতি দায়িত্ব পালনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এই সহায়তা সাময়িক হলেও তাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে সহায়ক হবে।

এছাড়াও বক্তারা বন্যাপরবর্তী পুনর্বাসন ও সহায়তার জন্য সবাইকে আরও সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। বন্যার তীব্রতা কাটিয়ে উঠতে এ ধরনের অর্থসহায়তা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।

‘হৃদয়ে ৮৮’ এবং ‘চ্যানেল হৃদয়ে ৮৮’-এর উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়, যাতে ভবিষ্যতে দেশের যে কোনো দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব হয়। স্থানীয় মানুষদের এই ধরনের সহায়তা ও উদ্যোগ ভবিষ্যতেও দুর্দশা লাঘবের জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ২ নম্বর কাজিরবাগ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ওমর ফারুক পিন্টু, ও সমাজ সেবক নাসির উদ্দিন (রুমন হাজারী), স্থানীয় প্রতিনিধি শামীম হোসেন, জামিয়াতুশ শহীদ মাদ্রাসা সোনাপুর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মুফতি আব্দুর রহিম, স্থানীয় প্রতিনিধি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

এছাড়াও ‘হৃদয়ে ৮৮’ ও ‘চ্যানেল হৃদয়ে ৮৮’- এর নেতাদের মধ্যে ডা. সাগর খান, সুচিত্রা মিলি, জুয়েল হাজারী, লুৎফুল হক সোয়েব, মারিয়া রোজারিও দিপালী, অধ্যাপক নার্গিস আফরোজ, সাহেদ সোহেল চৌধুরী, হান্নান সাগর, খিজির আলম, ইফতেখার শাহেদ, মীর দীপন ও আনারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।