বরগুনায় মধ্যরাতে ছাত্র আন্দোলনের দুই গ্রুপের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ২:৫১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪

বরগুনা প্রতিনিধি:

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে বরগুনা পৌরশহরের উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন সদর রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সমন্বয়কারীদের মধ্যে রেজাউল সমর্থকদের ওপর মীর নিলয় সমর্থকের শিক্ষার্থীরা হামলা করেছেন অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহতরা হলেন- আরিফ, আশিক, মহিবুল্লাহ ও আবু হানিফ। তাদের মধ্যে আরিফের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের বরগুনায় আগমন উপলক্ষ্যে ঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের একটি সভা আয়োজন করা হয়। এতে উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের বরগুনায় আগমন কর্মসূচি বাতিল করা হলে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিগত সময়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তার একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে উভয়পক্ষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে বরগুনা পৌর শহরের উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন সদর রোড এলাকায় গেলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের মধ্যে মো. রেজাউল বলেন, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের আগমন উপলক্ষ্যে আমরা সবাই একত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে একটি সভায় যোগ দেই। এ সময় গত ৪ আগস্টের কর্মসূচি বরগুনায় কী কারণে বন্ধ হয়েছিল তা নিজেদের মধ্যে আলোচনা হলে মির নিলয়ের নাম উঠে আসে। তাতে নিলয় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে আমরা বের হয়ে সদর রোড এলাকায় গেলে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। রাতে থানায় কোনো অভিযোগ না দিলেও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা আজ থানায় অভিযোগ দেবেন বলেও জানান তিনি।

অপরদিকে বরগুনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের মধ্যে মীর নিলয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই আমাদের ভূমিকা ছিল। বরগুনা শহরে ব্যবসায়ীদের খাজনা নিয়ে একটি সমস্যা চলছিল। এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে অনেক ব্যবসায়ীরাই কথা বলেছেন। তাদের সে সমস্যার সমাধানও হয়েছে। এতে ওরা (রেজাউল সমর্থকরা) আমাদের বলেন, আমরা বরগুনা বাজার থেকে অনেক টাকা পয়সা নিয়েছি। এ ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরগুনায় দুটি গ্রুপ আছে। এর একটি গ্রুপ ৫ আগস্টের পর থেকেই আমাকে নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার চালায়। গতকাল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের আগমন উপলক্ষ্যে তাদের সমন্বয়ে আরেকটি গ্রুপ খোলা হয়। সেখানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ব্যবসায়ীদের সংঙ্গে তোলা একটি সেলফি ওই গ্রুপে দিয়ে আমাদের দালাল বলে উল্লেখ করা হয়। পরে গতকাল রাতে আমরা একত্রে ছিলাম। এ সময় রেজাউল আমাদের নানা ধরনের উসকানিমূলক কথা বলেন। এতে উভয় পক্ষে তর্কবিতর্কসহ আমাকে একটি ধাক্কা দিলে উভয় পক্ষে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে আমি সবাইকে থামিয়ে ফিরে এসে ফেসবুকে দেখি, আমাদের মধ্যে মারামারি হয়েছে এবং তাদের কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান  বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে এতে রেজাউল একটি অভিযোগ দিবেন বলেছেন। তবে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।