চুরির অভিযোগে মাদ্রাসাছাত্রকে গাছে বেঁধে-চুল কেটে নির্যাতন, কারাগারে ৬
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মুদি দোকানে চুরির অভিযোগে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে (১১) গাছে বেঁধে মারধর, সিগারেটের আগুনে ছ্যাঁকা দেওয়া ও চুল কাটার ঘটনায় ৬ জন গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
তারা হলেন- উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের সামছুল হক (৫০), মনোহার শেখ মুনা (৫০), মো. সোলাইমান (৫৫), মো. রিফাত (২০), সদর থানার ফুলতলা এলাকার মো. জিহাদ (৩৫)। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় অপরজনের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।
ঘটনার শিকার ওই মাদ্রাসাছাত্র রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। এবং কুষ্টিয়া মাদ্রাসাতুল আবরার মাদ্রাসার হাফেজিয়া কওমি ছাত্র।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্র কুমারখালীর নন্দলালপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগর এলাকার দারুল আহাদ আল ইসলামিয়া নূরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। গত রোববার রাত ১১টার দিকে সে বর্তমান মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে আগের মাদ্রাসা আলাউদ্দিন নগরে যায়। পরদিন সোমবার ভোর রাতে টিনের বেড়া কেটে মাদ্রাসার পাশের সোলাইমানের মুদি দোকানে ঢুকে বিস্কুট, জুস ও খাদ্যসামগ্রী খায়। সেসময় আসামিরা টের পেয়ে ওই মাদ্রাসাছাত্রকে গাছে বেঁধে মারধর, সিগারেটের আগুনে ছ্যাঁকা এবং মাথার চুল কেটে দেন। এমন নির্মম নির্যাতন চলে সকাল ৯টা পর্যন্ত।
খবর পেয়ে ওই ছাত্রের মা তাকে উদ্ধার করে এবং সোমবার রাত ১২টার পরে ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় রাতেই আসামিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর মঙ্গলবার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
ওই মাদ্রাসা ছাত্রের মা বলেন, ‘আমার ছেলে ক্ষুধা নিবারণের জন্য টিন কেটে দোকানে ঢুকে বিস্কুট ও জুস খেয়ে ছিল। সেজন্য তাকে চুরির অপরাধে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি সুষ্ঠু বিচারের আশায় থানায় মামলা করেছি।’
মারধর ও চুলকাটার কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত দোকানদারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দোকানে ঢুকে চুরি করেছিল ওই ছাত্র। তাকে হাতে-নাতে ধরে মারধর করা হয়েছিল। স্থানীয় ছেলে-পেলে চুলকেটে ছিল। এখন চুলকাটাই বড় অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা আসলে ভুল হয়েছে।’
কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুকল্যাণ বিশ্বাস বলেন, মামলার পর ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।