সাভার প্রতিনিধি:
শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় বেশিরভাগ কারখানার উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ১৯টি কারখানা এখনো বন্ধ। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শিল্পাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
শিল্প পুলিশ জানান, খোলা কারখানাগুলোতে শ্রমিকরা সকাল ৮ থেকে কর্মস্থলে যোগ দিয়ে উৎপাদন শুরু করেন। অধিকাংশ কারখানায় উৎপাদন চললেও এখনো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ১৪টি কারখানা। বাকি পাঁচটি কারখানায় রয়েছে সাধারণ ছুটি। তবে কোথাও কোনো বিক্ষোভ ও অসন্তোষের খবর পাওয়া যায়নি।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ সূত্রে জানা যায়, বন্ধ কারখানাগুলোর অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা। এছাড়া অন্যান্য কিছু কারখানাও রয়েছে। এর বেশিরভাগই আর্থিক সঙ্কটসহ বিভিন্ন কারণে বন্ধ।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিল্পাঞ্চলে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। এছাড়া আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় বিভিন্ন কারখানার সামনে সেনাবাহিনী, এপিবিএন ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, কিছুদিন ধরেই পোশাক খাতে বিভিন্ন কারণে শ্রমিক আন্দোলন চলছে। সব দাবি পর্যালোচনা করে দেখা যায় শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি গুরুত্বপূর্ণ। এরই ফলে শিল্প মন্ত্রণালয়ে মালিক পক্ষ, শ্রমিক ও সরকারের বৈঠকে সব দাবি মেনে নেওয়া হয়। এর একটি যৌথ ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। ফলে শিল্পাঞ্চলে পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরাও কাজে যোগ দিয়েছেন। আশা করছি, এখন শিল্পাঞ্চলে সুশৃঙ্খল পরিবেশ ফিরে আসবে।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, আজকের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। ১৪টি কারখানা শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় বন্ধ রয়েছে। সেগুলোও খুলে দেওয়া হবে। এছাড়া পাঁচটি কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে চারটি ইপিজেডের। বন্ধ থাকা কারখানাগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই আর্থিক সঙ্কটের কারণে বন্ধ রয়েছে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর আওতাধীন এলাকায় ১৮৬৩টি কলকারখানা রয়েছে। যার বেশিরভাগই পোশাক কারখানা।
বেশ কিছুদিন ধরে শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন। এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই শিল্পাঞ্চলে কিছু কারখানা কার্যক্রম বন্ধ রেখেছিল। সব শেষ দেশে চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠকে বসে গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিকপক্ষ। বৈঠকে ১৮টি দাবির বিষয়ে একমত হয় শ্রমিক ও মালিকপক্ষ। ঘোষণা করা হয় আজ থেকে সারা দেশের সব শিল্প কারখানা খুলে দেওয়ার। এরই ধারাবাহিকতায় খুলে দেওয়া হয়েছে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার সব কারখানা। এসব কারখানায় শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছেন।