জামালপুর প্রতিনিধি:
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের সীমান্তবর্তী ডাংধরা ইউনিয়নের জিঞ্জিরাম নদী ও লোকাই ঝর্ণার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে ঝর্ণার গর্ভে বিলীন হয়েছে উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের পাথরের চর গ্ৰামের ১৪টি পরিবারের বসতভিটা। বিলীন হয়েছে অন্তত ৩০ বিঘা ফসলসমেত জমি। দিশাহারা হয়ে পড়েছেন ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ।
ভুক্তভোগী জব্বার মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এই লুকাই ঝর্ণার পাড়ে বসবাস করছি। টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলেই লোকাল ঝর্ণার পানি বৃদ্ধি পায়। পানিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। প্রতিবছর একটু একটু করে ভাঙতে ভাঙতে আমাদের বসতবাড়ির সব জমি বিলীন হয়ে গেছে।
শুক্কুর আলী বলেন, গত তিন দিনের টানা ভারী বর্ষণে পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আমাদের বসবাসের জায়গাটুকু ঝর্ণার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের আর অন্য কোথাও বসতবাড়ি গড়ার জায়গা নেই। বর্তমানে পরিবার নিয়ে রাস্তায় মানবতার জীবন যাপন করছি।
ওই গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আমার বসতবাড়িটুকু ভেঙে ঝর্ণার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই বসতভিটা ছাড়া আমার অন্য কোথাও আর মাথা গুজার ঠাঁই নেই। গত তিন দিনের পাহাড়ি ঢলে শেষ সম্বল বাড়িটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় এখন মানবতার জীবন যাপন করছি। এখন পর্যন্ত আমরা সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি। আমরা ত্রাণ চাই না, লোকাই ঝর্ণার ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে চাই।
ডাংধরা ইপি সদস্য মাসুদ করিম জীবন বলেন, প্রতি বছর এভাবে ভেঙে ঝর্ণার পাড়ের মানুষগুলোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এর দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না হলে, পাথরের চর গ্রামের শত শত মানুষের বাড়িঘরের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। এছাড়াও নদীভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে পাথরের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাথরের চর বিজিবি ক্যাম্প, মসজিদসহ শত শত স্থাপনা। লোকাই ঝর্ণার ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, পাথরের চর ঝর্ণায় বাড়িঘর বিলীন হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলা হবে।