এবারও সভাপতি পদ থেকে পিছু হটলেন তরফদার

প্রকাশিত: ১২:৩৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৩, ২০২৪

ক্রীড়া ডেস্ক:

বাফুফের সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে তরফদার রহুল আমিন শেষ পর্যন্ত লড়াই করবেন না, সেটি তার ঘনিষ্ঠজনরাই বলে আসছিলেন। কিন্তু অনেকের কাছে সেটি বিশ্বাস হচ্ছিল না। এত ঘটা করে পাঁচ তারকা হোটেলে ঘোষণা দিয়েও তিনি সভাপতি পদে লড়বেন না আনুষ্ঠানিকভাবে অপেক্ষা ছিল। গতকাল মনোনয়নপত্র কেনার শেষ দিনে তাই বাফুফে ভবনে সংবাদমাধ্যমের উপচে পড়া ভিড়। সেখানেই তরফদার রুহুল আমিনের ঘনিষ্ঠসূত্র কানাকানি করে বলছিলেন তার স্যার সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন।

বিকালে রুহুল আমিনের অফিস থেকে তার প্রতিনিধি নাজমুল করিম বাফুফে ভবনে গিয়ে মনোনয়নপত্র কিনলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে। আরও একবার পিছু হটলনে রুহুল আমিন। জল্পনা-কল্পনার অবসান হলো তাবিথ আওয়ালের বিপক্ষে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ নেই। মনোনয়নপত্র কিনে জানিয়ে গেলেন, স্যার ফুটবলের সঙ্গে থাকবেন। পরিষ্কার হয়ে গেল রুহুল আমিনের অবস্থান, কিন্তু এই পদে আগেই মনোনয়নপত্র কিনে রেখেছেন ইমরুল হাসান। একটা পদের জন্যই মনোনয়নপত্র নিলেন। ধরেই নেওয়া যায়, লড়াই হবে রুহুল আমিন-ইমরুল হাসানের মধ্যে। এই পদ থেকে কেউ যদি না সরে যান তাহলে আকর্ষণ থাকবে।
তবে ফুটবল অঙ্গনের অভিমত হচ্ছে, দুজনেই লড়াই করবেন। ইমরুল হাসান ছাড় দেবেন কি না, সেটা নির্ভর করছে তার ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার ওপর। কারো কথায় সরে দাঁড়ানোর মনোভাব তার নেই। অন্যদিকে রুহুল আমিনও ইমরুলকে ছাড় দেবেন কি না, সেটাও নির্ভর করছে নানা সমীকরণের ওপর। ইমরুল এবং রুহুল আমিনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একই পদে মনোনয়নপত্র তুলেছেন আরেক প্রার্থী মনির হোসেন। তিনি পাইওনিয়র লিগের ক্লাব রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের মুরাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক।

মনির হোসেন জানিয়েছেন, তিনি সভাপতি পদে নির্বাচন করতেন, কিন্তু সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়ে আগে কাজ শিখতে চান। শিখে আরও ওপরে উঠতে চান। মনির হোসেন বলেন, ‘ইমরুল সাহেব হেভিওয়েট প্রার্থী, আরেক জনকে আমি চিনি না। ও আচ্ছা রুহুল আমিন সাহেব। হেভিওয়েট প্রার্থী থাকলেও আমি কোনো নেগোসিয়েশন করতে রাজি না। আমি কোনো চাপে মাথা নত করব না। নির্বাচন করব।’

শেষ বিকালে ১ লাখ টাকা জমা দিয়ে আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদওয়ান সভাপতি পদে ফরম কিনলেও তিনি একই সঙ্গে সহ-সভাপতি পদেও ফরম কিনেছেন। মূলত তাকে ক্রিকেটে দেখা যায়। ক্রিকেট সংগঠক হিসেবেই তার পরিচিতি। কিন্তু সম্প্রতি ফুটবল অঙ্গনেও নির্বাচন করার জন্য এসেছেন। একাধিক ব্যক্তি একাধিক পদের জন্য মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছেন। তারা ধরেই নিয়েছেন, এক পদে না হলে অন্য কোনো পদে নির্বাচন করবেন। যারা মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন তাদের মধ্যে বেশির ভাগই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক তাদের সিনিয়র কর্মকর্তারা। এটি জানা যাবে মনোনয়পত্র জমাদানের পর।

১৪ অক্টোবর সোমবার এবং ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। আর প্রত্যাহার ১৯ ও ২০ অক্টোবর। প্রত্যাহারের দিনেই শেষ চমক কী রয়েছে, সেটি আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে। একাধিক সাবেক ফুটবলার এবার বাফুফের নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছেন। গত নির্বাচনে সাবেক ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিক সভাপতি পদে নির্বাচন করে ১ ভোট পেয়েছিলেন। এবার তিনি সহ-সভাপতি পদে মনোনয়ন তুলেছেন। সাব্বির দুই মেয়াদ আগে নির্বাচন করেছেন কিন্তু ব্যালট বক্সের সাব্বিরের ভোট সংখ্যা তলানিতে পড়েছিল। রূপু দুই পদের জন্য মনোনয়ন তুলেছেন।

সভাপতি পদে মনোনয়ন তুলেছেন চার জন: তাবিথ আওয়াল, মিজানুর রহমান চৌধুরী, আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদওয়ান, শাহাদাত হোসেন।

সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে মনোনয়ন তুলেছেন তিন জন: ইমরুল হাসান, তরফদার রুহুল আমিন, মনির হোসেন।

সহ-সভাপতি পদে মনোনয়ন তুলেছেন ১২ জন: নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, ফাহাদ করিম, ইকবাল হোসেন, সাব্বির আহমেদ আরেফ, ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী, রশিদ সামিউল ইসলাম, রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির, আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদওয়ান, শফিকুল ইসলাম মানিক, সত্যজিত দাশ রূপু, মিসবাহ আহমেদ বিন সামাদ চৌধুরী, সাঈদ হাছান কানন।

সদস্য পদের জন্য মনোনয়ন কিনেছেন ৪৩ জন: তাসমিয়া রেজওয়ানা, সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া শাহীন, ইয়াকুব আলী, ইকবাল হোসেন, কামরুল হাসান হিলটন, গোলাম গাউস, জাকির হোসেন চৌধুরী, নজরুল ইসলাম, মঞ্জুরুল আলম দুলাল, মাহফুজা আক্তার কিরণ, হাজী টিপু সুলতান, আমিনুল হক মামুন, ইমতিয়াজ আহমেদ, সত্যজিত দাশ রূপু, মানস চন্দ্র দাশ, আমিরুল ইসলাম বাবু, বিজন বড়ুয়া, মাহমুদা খাতুন, আমের খান, এখলাস উদ্দিন, শফিকুল আজম ভূঁইয়া, শরিফ উদ্দিন, মঞ্জুরুল করিম, সাইফুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন জনি, মহিউদ্দিন সেলিম, সাইফুর রহমান মনি, খন্দকার রকিবুল ইসলাম, রওশন আক্তার, ডেইজি জাফর, মহিদুর রহমান মিরাজ, মঞ্জুরুল করিম, শাহাদাত হোসেন, আব্দুল হাফিজ, জসিম উদ্দিন খান খসরু, শহিদুল ইসলাম, রিয়াজ উদ্দিন, নুরুজ্জামান, মিসবাহ আহমেদ বিন সামাদ চৌধুরী, সাঈদ হাছান কানন, মাহবুবুর রহমান শাহীন, দেলোয়ার হোসেন, শাকিল মাহমুদ চৌধুরী, শাহিন হাসান।