নেতানিয়াহুকে ‘শয়তানের পুত্র’ আখ্যা দিলেন নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ডেস্ক রিপোর্ট:
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।
এমন অবস্থায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে নাৎসি জার্মানির নেতা অ্যাডলফ হিটলারের সাথে তুলনা করেছেন নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা। একইসঙ্গে নেতানিয়াহুকে “শয়তানের পুত্র” বলেও আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানাগুয়া ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার তিন দিন পর নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা গত সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে অ্যাডলফ হিটলারের সাথে তুলনা করেছেন এবং তাকে “শয়তানের পুত্র” বলে উল্লেখ করেছেন।
নিকারাগুয়ান পুলিশের ৪৫ তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেওয়া বক্তৃতায় ওর্তেগা বলেন, “ইসরায়েল সরকারের প্রধান একজন প্রধানমন্ত্রী আছেন যিনি শয়তানের পুত্র।”
প্রেসিডেন্ট ওর্তেগা বলেন, তিনি নেতানিয়াহুকে হিটলারের সাথে তুলনা করেন কারণ ইসরায়েলের এই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যপ্রাচ্যে “অভ্যাসগতভাবে সন্ত্রাসের নীতি” রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “এবং এটি হিটলার, হ্যাঁ, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হলেন হিটলার, তিনি জনগণকে ধ্বংস করার আহ্বান জানিয়েছেন।”
আনাদোলু বলছে, ইসরায়েলের ফ্যাসিবাদী ও অপরাধমূলক যুদ্ধবাজ সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যে নৃশংস গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে তার এক বছর পর গত শুক্রবার নিকারাগুয়ান সরকার ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নিকারাগুয়া প্রজাতন্ত্রের সরকার ইসরায়েলের ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে সমস্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।”
প্রেসিডেন্ট ওর্তেগার স্ত্রী ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজারিও মুরিলো এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। নিকারাগুয়ান পার্লামেন্টের একটি রেজুলেশনের ভিত্তিতে দেশটি এই সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর সরকার সোমবার ইসরায়েলে তাদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহারের নির্দেশও দিয়েছে।
২০১০ সালে ওর্তেগা সম্পর্ক ছিন্ন করার পর ২০১৭ সালে ইসরায়েল ও নিকারাগুয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিল।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪২ হাজার ৩০০ জন লোক নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া ৯৮ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।