জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
‘হামার ছলক কেড়ে নিয়ে বুকটা খালি করেছে, হামি আল্লাহর কাছে বিচার দিমু, কিন্তু হামার ছলের লাশ তুলতে দিমু না।’ গত ৫ আগস্ট নিহত অটোচালক মেহেদীর মরদেহ উত্তোলনে বাধা দিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নিহতের মা ফাতেমা।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৩টার পর মরদেহ উত্তোলনে বাধা দেয় নিহতের পরিবার। নিহত মেহেদী জয়পুরহাট জেলা শহরের নতুনহাট শেখপাড়ার বাসিন্দা। তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক ছিলেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিজয় মিছিল নিয়ে সদর থানা এলাকায় গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মারা যান।
ঘটনার পর ২০ আগস্ট দুপুরে জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি-১ আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদসহ ২১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত মেহেদীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার সৃষ্টি।
আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলনে গিয়েছিলেন জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রউফ। এ সময় জয়পুরহাট জেলা কারাগারের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহ আলম শোভন, সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মিজানুর রহমান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদী নিহত মেহেদীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার সৃষ্টি বলেন, এতো স্বাক্ষী প্রমাণ থাকার পরও যদি লাশ তুলতে হয়, তাহলে হামি মামলা উঠায়ে নেব। এমনি আমার স্বামী অনেক কষ্ট পেয়েছে। আর কষ্ট দিতে চাই না। লাশ তুলতে দেব না।
নিহতের দুই বোন আলেয়া ও সাবানা বলেন, আমরা ভাইয়ের লাশ তুলতে দেব না। সুষ্ঠু বিচার হয় হবে, না হয় না হবে। তবুও লাশ তুলতে দেব না। মামলা করার আগে বলা হয়েছিল লাশ তুলবে না। কিন্তু এখন লাশ কেন তোলা হচ্ছে? আপনারা সঠিক বিচার করতে চাইলে লাশ না তুলে সঠিক বিচার করেন।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রউফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিহতের পরিবার লাশ তুলতে বাধা দিয়েছে। আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।