এসএম দেলোয়ার হোসেন:
বিএনপি-জামায়াত ঘোষিত দেশজুড়ে অবরোধের দ্বিতীয় দিন আজ। এদিনও রাজধানীর গাবতলী, সায়দাবাদ ও মহাখালী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ঢাকা ছাড়েনি। বাস টার্মিনালের অধিকাংশ টিকিট কাউন্টারই বন্ধ রয়েছে। রাজধানীর অভ্যন্তরে বিভিন্ন রুটে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও আশানুরূপ যাত্রী পাচ্ছে না পরিবহন শ্রমিকরা। সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, অবরোধের কারণে আগুন সন্ত্রাসের ভয়ে যাত্রী সাধারণের মাঝে অজানা আতঙ্ক থাকায় জীবিকার তাগিদে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যানবাহনে চড়েই গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছেন। এদিকে রাজধানীর তিনটি বাস টার্মিনালের পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধ কর্মসূচির কারণে অজানা শঙ্কায় যাত্রীরা টার্মিনালে আসছেন না। যার ফলে যাত্রী সংকট থাকায় রাজধানীর তিনটি বাস টার্মিনাল থেকে আপাতত দূরপাল্লার কোনো বাস ঢাকা ছাড়ছে না। তবে আসন৷ সংখ্যা পরিপূর্ণ হলে এবং যাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ঢাকা ছেড়ে যেতে প্রস্তুত রয়েছে দূরপাল্লার বাাস। এদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, অবরোধের নামে কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে। এজন্য বাস টার্মিনাল ও সড়কে নিরাপত্তা টহল জোরদার করা হয়েছে। আজ সকালে রাজধানীর ৩টি বাস টার্মিনাল ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্যচিত্র পাওয়া গেছে।
আজ বুধবার (১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানীর গাবতলী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাস টার্মিনাল এর ভেতর সারি সারি দূরপাল্লার বাস পার্কিং করে রাখা হয়েছে। অলস সময় কাটাচ্ছেন এসব পরিবারের শ্রমিকরা। তবে রাজধানীর অভ্যন্তরীণ রুটের গণপরিবহনগুলোকে স্বাভাবিক গতিতেই চলাচল করতে দেখা যায়, রয়েছে মানুষের আনাগোনাও। তবে অবরোধ আতঙ্কে বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়ছে না কোনো দূরপাল্লার বাস।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর থেকেই স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করছে রাজধানীর গণপরিবহন। যাত্রীরা স্বাভাবিক দিনের মতোই বাসে চড়তে পারছেন। এছাড়া মহাসড়কে সিএনজি, লেগুনা ও মাইক্রোবাস চলাচল করতে দেখা গেছে।
সাভারগামী যাত্রী হেলাল উদ্দিন বলেন, আজ বাস পেতে তেমন কোনো ভোগান্তি হয়নি। দু-একটা রুটের বাস কিছুটা কম ছিল, কিন্তু সব ধরনের গাড়িই চলাচল করছে।আরেক যাত্রী মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, গতকাল যে একটা ভোগান্তি কাজ করেছিল, আজ তা কম। ঝামেলা ছাড়াই আজ বাসে চড়া যাচ্ছে।
অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চললেও গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী থেকে ছেড়ে যাচ্ছে না কোনো দূরপাল্লার বাস। অধিকাংশ বাসের টিকিট কাউন্টার বন্ধ। যাত্রীর সংখ্যাও হাতে গোনা দু-একজন। বাস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবরোধ আতঙ্কেই ছাড়া হচ্ছে না কোনো বাস। একই কারণে যাত্রীদের সংখ্যাও অনেক কম।
এ বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গগামী কমফোর্ট লাইন কাউন্টারের ম্যানেজার ইউসুফ আহমেদ বলেন, সকাল থেকে তো বাস ছাড়ার জন্যই বসে আছি। কিন্তু একটা যাত্রীও তো আসছে না। ফলে দু-একটা কাউন্টার ছাড়া সব বাস বন্ধ আছে।
তিনি বলেন, অবরোধের কারণে যদি একটা বাস পুড়ে যায়, সেটা তো মালিকের জন্য অনেক বড় ক্ষতি। তাই কেউ রিস্ক নিতে চাচ্ছে না।
গাবতলী থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়ছেও কম, আবার ঢাকার বাইরে থেকে বাস প্রবেশের সংখ্যাও খুব সীমিত। কেবলমাত্র মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়াঘাটগামী সেলফি পরিবহনকে চলাচল করতে দেখা যায়। তবে অবরোধ কর্মসূচির পক্ষে গাবতলী এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি।
নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে কঠোর সতর্কতা অবস্থা তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।