ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার চাকুয়া গ্রাম এলাকায় কালিবানার নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় ড্রেজারসহ একটি বাল্কহেড আটক করেছে এলাকাবাসী। গতকাল শুক্রবার সকালে স্থানীয় বিএনপি নেতা সেলিম মৃধার ড্রেজারসহ বালুভর্তি বাল্কহেডটি আটক করা হয়েছে। খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় আটক নৌকাটি ছিনিয়ে নিতে মালিকপক্ষের লোকজন এলাকাবাসীর ওপর হামলা চালায়। এতে এলাকাবাসী ও মালিকপক্ষের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে রাতে পাগলা থানা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির এক নেতার সহযোগী বিএনপি নেতা সেলিম মৃধার লোকজন কালিবানার নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। এলাকাবাসী অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের শরণাপন্ন হয়। এতে কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় শুক্রবার ভোরে বালু উত্তোলনকালে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে ড্রেজারসহ বালুভর্তি একটি বাল্কহেড আটক করে থানার পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেয়। পরে সকাল ৭টার দিকে পাগলা থানার পুলিশ ও সকাল ১১টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমির সালমান ঘটনাস্থলে যান। দুপুর ১২টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপস্থিতিতে পাগলা থানা ছাত্রদল নেতা ইয়াছিন মৃধার নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের সশস্ত্র একটি দল এলাকাবাসীর ওপর হামলা চালায়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়। আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হামলায় সংঘর্ষের খবর পেয়ে গফরগাঁও অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের মেজর শরীফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সদ্য বিলুপ্ত পাগলা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হামিদ বলেন, ‘বিএনপি নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চুর অনুসারী সেলিম মৃধার নেতৃত্বে কালিবানার নদীরপাড় থেকে প্রতি রাতেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে নদী ভাঙনের ফলে আমাদের ফসলি জমি বিলীন হওয়ার পথে।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিএনপি নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চুর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া ইয়াসমিনের ভাষ্য, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে বাল্কহেডটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, ‘বালু উত্তোলন নিয়ে মারামারির ঘটনা সত্য। আমি আর ইউএনও গিয়েছিলাম ঘটনাস্থলে। তবে এখনও থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।’