অবৈধ সম্পদ অর্জন: দুদকের জালে সস্ত্রীক নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রায় ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ঘুষের টাকাসহ গ্রেফতার নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী অ্যান্ড শিপ সার্ভেয়ার এস এম নাজমুল হক ও তার স্ত্রী সাহেলা নাজমুলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার (৩০ জুলাই) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১০৯ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় এবং দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২), ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। আজ বিকেলে নিউজ পোস্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি সাহেলা নাজমুল ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৮০ লাখ ২২ হাজার ২৫৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য দেন। তার সম্পদের মধ্যে রয়েছে খুলনার ৩৭/১, রায়পাড়া রোডে দুই কাঠা জমিতে তিনতলা বাড়ি, ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড়–য়াস্থিত মৌজায় ৫ কাঠা জমি, সিদ্ধেশ্বরীতে দুই তলায় ৭০০ বর্গফুটের একটি দোকান, তুরাগ থানাধীন ভাটুলিয়া মৌজায় ৩৩ শতাংশ জমি, উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরের উত্তরা প্রকল্পে ফ্ল্যাট ও পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমির প্লট। সব মিলিয়ে দুদকের অনুসন্ধানে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ২৫০ টাকার স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। আর সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ে আসামি সাহেলা নাজমুলের নামে ২ কোটি ৫০ লাখ ৬২ হাজার ২৫৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। এরমধ্যে স্বামীর কাছ থেকে পাওয়া ৭০ লাখ টাকাও রয়েছে।
অনুসন্ধানে সাহেলা নাজমুলের ঘোষণা করা সম্পদ বাদ দিলে ৪৬ লাখ ২১ হাজার ২৫০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ১ কোটি ৭০ লাখ ৪০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ গোপন করার তথ্য পাওয়া যায়। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে যার পরিমাণ ২ কোটি ১৬ লাখ ৬১ হাজার ২৫০ টাকা। এছাড়া অনুসন্ধানে ২ কোটি ৬৪ লাখ ৭১ হাজার ১৩১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। চাকরিকালে নাজমুল হক ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করে সেগুলো বৈধ করতে স্ত্রীর নামে রাখেন। যে কারণে সাহেলাকে প্রধান আসামি এবং নাজমুলকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল ঘুষের ৫ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) এস এম নাজমুল হক।
অভিযোগ ছিল, মেসার্স সৈয়দ শিপিং লাইনসের এমভি প্রিন্স অব সোহাগ নামের যাত্রীবাহী নৌযানের রিসিভ নকশা অনুমোদন এবং নতুন নৌযানের নামকরণের অনাপত্তিপত্রের জন্য নাজমুল হকের কাছে গেলে তিনি ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিষয়টি দুদককে জানান। রাজধানীর সেগুনবাগিচার একটি হোটেলে বসে ঘুষের টাকার কিস্তি বাবদ নগদ ৫ লাখ টাকা নেওয়ার সময় নাজমুল হককে হাতেনাতে গ্রেফতার করে দুদক। ওই দিনই রাজধানীর রমনা মডেল থানায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এর সহকারী পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে এ বিষয়ে মামলা করেন। যা এখন আদালতে বিচারাধীন বলে জানা গেছে।