নিজস্ব প্রতিবেদক:
কলেজছাত্রীকে প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন পেয়েছেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী। এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (১৪ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশ দেন। এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করা হয়। পরে এর শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত। আদালতে আজ জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভেকেট মো. মজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট রেদওয়ানুল করিম ও একেএম খলিলুল্লাহ কাশেম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আবুল হাশেম।
অ্যাডভেকেট মো. মজিবুর রহমান নিউজ পোস্টকে বলেন, ধর্ষণে সহযোগিতা করার মামলায় ৬ সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন। ৬ সপ্তাহ পরে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ১০ আগস্ট কলেজছাত্রীকে প্রলোভনে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন শিক্ষার্থীর বাবা। আইডিয়ালের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকেও মামলার আসামি করা হয়। কলেজছাত্রীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ওই ছাত্রীকে ক্লাস থেকে অধ্যক্ষের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে আসামি তাকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ওই ছাত্রীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করেন। পরে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেন। মুশতাকের এ ধরনের আচরণের বিষয়ে আইডিয়াল অধ্যক্ষকে (২ নম্বর আসামি) ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন ভুক্তভোগী। তবে তিনি (অধ্যক্ষ) ব্যবস্থা করছি বলে আসামি মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন। সেসময় ভুক্তভোগীকেও ক্লাস থেকে নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে মুশতাককে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।
এ বিষয়ে বাদী কলেজের অধ্যক্ষের কাছে প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি। বরং আসামি মুশতাককে অনৈতিক কাজে সাহায্য করতে থাকেন। বাদী উপায় না পেয়ে গত ১২ জুন তার মেয়েকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে নিয়ে যান। পরে আসামি মুশতাক তার লোকজন দিয়ে তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর বাদী জানতে পারেন মুশতাক ভুক্তভোগীকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছেন এবং যৌন নিপীড়ন করেছেন।