আদালতে আইনজীবীদের হট্টগোল, এজলাস থেকে নেমে গেলেন বিচারকরা

প্রকাশিত: ৫:০৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০২৪

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত এক ব্যক্তির মামলায় বিচারিক আদেশ নিয়ে বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের তর্কাতর্কি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক আদালতের বিচারক বিব্রত হয়ে এজলাস থেকে নেমে যান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অন্য বিচারকরাও মামলা না শুনে এজলাস থেকে নেমে যান।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম অলি উল্লাহর আদালতে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর দুপুরে অন্য বিচারকরাও মামলা না শুনে এজলাস থেকে নেমে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৭ জুলাই নগরীর মুরাদপুর এলাকায় ছাত্রলীগের হামলায় আহত হন শোয়াইবুল ইসলাম। আহত এ ভুক্তভোগী মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলার আবেদন করেন। মামলাটি মহানগর হাকিম অলি উল্লাহর আদালতে শুনানি হয়। মামলায় ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। আদালতে ওই মামলায় বাদীর আইনজীবী চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন চৌধুরী। সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলা পিপি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি।

জানা যায়, বাদী মামলার আবেদনে মামলাটিকে থানায় এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার আবেদন করেন। কিন্তু মামলার আবেদন শুনানিতে আদালত বাদীর জবানবন্দি নেন। জবানবন্দি গ্রহণের সময় বাদীর কাছে মামলায় থাকা আসামিদের নাম জানতে চান বিচারক। কিন্তু বাদী কয়েকজনের নাম বলে থেমে যান। এসময় আইনজীবী আদালতকে বলেন, এভাবে সবার নাম বলা সম্ভব নয়। পরে বিষয়টি নিয়ে বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। একপর্যায়ে আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন এবং বিব্রত হয়ে এজলাস থেকে নেমে যান বিচারক অলি উল্লাহ। এ ঘটনা জানাজানি হলে মহানগর হাকিম আদালতের অন্য বিচারকরাও এজলাস থেকে নেমে যান।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পিপি আশরাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মুরাদপুর এলাকায় আহত এক ভিকটিম আদালতে মামলার আবেদন করেন। মামলার অভিযোগটি থানায় এজাহার হিসেবে নিতে আদালতে আবেদন করা হয়। কিন্তু বিচারক বাদীর কাছে আসামিদের নাম জানতে চান। এভাবে সব আসামির নাম বলা সম্ভব নয়। আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর আমাকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মহানগর হাকিম আদালতে বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল হয়েছে শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি।’

সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, ‘মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার শুনানির সময় আইনজীবী ও বিচারকের মধ্যে হট্টগোল হয়েছে। এখন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে।’