আমি আমার ছেলে ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডেরিকের কাছে সিংহাসন তুলে দিচ্ছিঃডেনমার্কের রানি

প্রকাশিত: ৩:৪২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২, ২০২৪

বিবিসিঃ
ডেনমার্কের রানি দ্বিতীয় মারগ্রেথ নতুন বছরের শুরুতে একটি টেলিভিশন ভাষণে আকস্মিকভাবে রাজত্ব ত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪ই জানুয়ারিতে পদত্যাগ করবেন, ওই দিন তার রানি হিসেবে সিংহাসনে আরোহণের ৫২ বছর হবে। তিনি ঘোষণা দেন ‘আমি আমার ছেলে ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডেরিকের কাছে সিংহাসন তুলে দিচ্ছি’। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
৮৩ বছর বয়সী দ্বিতীয় মারগ্রেথ বর্তমানে বিশ্বের একমাত্র রাজত্বকারী রানি। ইউরোপের যতো দেশে রাজা রানি রয়েছেন তার মধ্যে তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সিংহাসনে আছেন।ওই টেলিভিশন ভাষণে রানি জানিয়েছেন যে, ২০২৩ সালের প্রথম দিকে তার পিঠে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর তিনি রাজত্ব ত্যাগের কথা ভাবতে শুরু করেন। তিনি বলেন ‘এই অস্ত্রোপচার স্বাভাবিকভাবেই আমাকে ভবিষ্যতের বিষয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে যে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার সময় এসেছে কিনা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এখনই সঠিক সময়।’

এতোটা বছর ধরে রাজপরিবারের পাশে থাকার জন্য তিনি ডেনিশ জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান।

ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন রানিকে তার কাজের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এক হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজ দায়িত্ব এবং পদ হস্তান্তর হয়ে এলেও এটা বোঝা কঠিন যে কখন সিংহাসন পরিবর্তনের সময় এসেছে।’

যুক্তরাজ্যের মতো ডেনমার্কেও সাংবিধানিক রাজতন্ত্র রয়েছে।

পরবর্তী রাজা ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডেরিক

ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডেরিক ১৯৯০ দশকের শুরুর দিকে ডেনমার্কে আমোদ স্ফুর্তি করা রাজপুত্র হিসাবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু তিনি ১৯৯৫ সালে আরহাস ইউনিভার্সিটি থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করার পরে সেই ধারণা বদলাতে শুরু করে।

তিনিই দেশটির প্রথম রাজপরিবারের সদস্য যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষ করেছেন। পড়াশোনার সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ডে বিশ্ববিদ্যালয়েও সময় কাটিয়েছেন, সেখানে তিনি ফ্রেডেরিক হেনরিকসেন ছদ্মনামে ভর্তি হন।

পরে তিনি ডেনিশ নৌবাহিনীতে কাজ করেন, সেখানে তাকে ‘পিঙ্গো’ ডাকনাম দেওয়া হয়। এর কারণ প্রকাশ হয়েছে গণমাধ্যম দ্য মেইলে। ওই খবর অনুসারে, স্কুবা ডাইভিং কোর্স চলাকালে ফ্রেডেরিকের পরনে থাকা ওয়েটস্যুটটি পানিতে ভর্তি হয়ে যায়। পরে তাকে পেঙ্গুইনের মতো হাঁটতে হয়েছিল।

২০০০ সালে গ্রিনল্যান্ড জুড়ে চার মাসের স্কি অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এ কারণে তিনি দুঃসাহসী বা ডেয়ারডেভিল ব্যক্তি হিসাবে আখ্যা পান।

এমনকি স্লেজিং এবং স্কুটার দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তিনি হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন। তিনি বলেন ‘আমি নিজেকে কোন দুর্গে বন্দী করতে চাই না। আমি আমার মতো একজন মানুষ হতে চাই।’

এছাড়া তিনি আরও বলেছিলেন, যে সিংহাসনে আরোহণের পরেও তিনি তার এসব সখের সাথে যুক্ত থাকবেন।

এখন আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ডেনমার্কের রাজা হতে চলেছেন।