ইনজুরি সময়ের গোলে সর্বনাশ বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ১০:৩৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২৪

ক্রীড়া ডেস্ক

র‌্যাংকিয়ে ৮৬ ধাপ এগিয়ে ফিলিস্তিন। এর আগে পাঁচবারের দেখায় কোনোবারই তাদের হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে ১-১ গোলে ড্র করেছিল, এরপর চারবার হেরেছে এই দলের বিপক্ষে।

সবশেষ দেখায় কুয়েতের মাঠে হেরেছে ৫-০ গোলে। সেই ফিলিস্তিনকেই এবার ঘরের মাঠে প্রায় রুখেই দিয়েছিল বাংলাদেশ। ৯৪ মিনিট পর্যন্ত আটকে রেখেছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে। তবে শেষ রক্ষা হলো না।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলশূন্য। বাড়িয়ে দেওয়া ৮ মিনিটের তৃতীয় মিনিট পর্যন্তও ফিলিস্তিনকে আটকে রেখেছিল বাংলাদেশ। কুয়েতে ৫-০ গোলে হারের পর ঘরের মাঠে ফিলিস্তিনকে রুখে দেওয়া যেন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু ইনজুরি সময়ের চতুর্থ মিনিটে সর্বনাশ হয়ে যায় বাংলাদেশের।

বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আগের চার ম্যাচের কোনোটিতে হার ছিল না বাংলাদেশের। এই ভেন্যুটি প্রেরণাই ছিল ক্যাবরেরার শিষ্যদের। শেষ পর্যন্ত নতুন ভেন্যুতে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা আর থাকলো না লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। এ নিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বে চার ম্যাচ খেলে তিনটিই হারলো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ গোল খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে ফিলিস্তিন ১০ জনের দলে পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশ সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। উল্টো ফিলিস্তিনই ১০ জনের দল নিয়ে ঢাকা থেকে তুলে নিলো মূল্যবান ৩ পয়েন্ট। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে এ নিয়ে ৮ ম্যাচ খেলে টানা ৭ টি হারলো বাংলাদেশ

বাংলাদেশের জন্য অশনি সঙ্কেত শুরু হয় ৮৩ মিনিটে মিতুল মারমা চোট পেয়ে মাঠ থেকে বের হওয়ার পর। তার পরিবর্তে মেহেদি হাসান শ্রাবণ মাঠে নেমেছিলেন। বদলি গোলরক্ষকই হজম করেন গোল। যদিও গোল খাওয়ার জন্য শ্রাবণের ভুল ছিল না। রক্ষণের খেলোয়াড়রা ঠিকমতো মার্কিং করতে পারেননি ফিলিস্তিনের ফরোয়ার্ডদের। ৯৪ মিনিটে ধাধার পাস থেকে গোল করেন মাইকেল তারমানিনি।

প্রথমার্ধে ফিলিস্তিনকে গোলশূন্যভাবে রুখে দিয়ে দ্বিতীয়ার্ধেই চোখে চোখ রেখে খেলছিল রাকিব-তপু বর্মনরা। ৫-০ ব্যবধানে হারের পরের ম্যাচ গোলশূন্য হলে কুয়েতের ব্যর্থতা কিছুটা কমতো বাংলাদেশের। কিন্তু তীরে এসে তরী ডুবেছে। ইনজুরি সময়ে গোল খেয়ে ১৮ বছর পর ফিলিস্তিনের বিপক্ষে আরেকটি ড্র করার সুযোগ হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের।

৪৮ মিনিটে নিশ্চিত গোল হজম থেকে বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ভালো গোলকিপিং করা মিতুল মারমা ভুলটা করেছিলেন। শাকিল ব্যাক পাস দিয়েছিলেন মিতুলকে।

মিতুল বলটি পায়ে নিয়ে ফিরতি পাস দিতে চেয়েছিলেন শাকিলকে। কিন্তু বল পেয়ে যান আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা ওদে দাবাঘ। ছোট বক্সের মাথা থেকে নেওয়া দাবাঘের শট চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে বাইরে।

৫৭ মিনিটে বাম দিক থেকে বদলি মাহমুদ ধাধার ক্রসে ওদে দাবাঘ হেড নিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমা দুর্দান্ত সেভে গোলবঞ্চিত হয় ফিলিস্তিন।

৭৪ মিনিটে মাহমুদ ধাধার কাছ থেকে বল পেয়ে গোলমুখে ক্রস নিয়েছিলেন মুসাব। বক্সে সেই বলে শট নিয়েছিলেন ওদে খাবুর। এবারো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মিতুল মারমা। ফিস্ট করে বল পাঠিয়ে দেন বাইরে।

অতিরিক্ত সময়ে প্রথম মিনিটে বদলি ইসা ফয়সাল দুর্দান্ত পাস দিয়েছিলেন রাকিবকে। রাকিকে বাধা দেন ফিলিস্তিনের ডিফেন্ডার আহমেদ মাহাজনেহ। ওই সময় আহমেদ রেফারির সঙ্গে তর্ক করে দুইবার হলুদ কার্ড (লালকার্ড) পেয়ে মাঠ ছাড়েন।

মিতুল মারমা (শ্রাবণ), তপু বর্মণ, বিশ্বনাথ ঘোষ, শাকিল হোসেন, সাদ উদ্দিন, মো. হৃদয়, মজিবর রহমান জনি (ইসা ফয়সাল), সোহেল রানা, জামাল ভুঁইয়া (সোহেল রানা-২), রাকিব হোসেন ও ফয়সাল আহমেদ ফাহিম (রফিকুল)।