ইন্দোনেশিয়ায় ইফতারের খুৎবায় মূল্যস্ফীতি নিয়ে সতর্কবার্তা

প্রকাশিত: ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

ইন্দোনেশিয়ায় বিভিন্ন মসজিদে ইফতারের আগে প্রদান করা খুৎবায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন ইমাম ও ধর্মীয় নেতারা। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংক ইন্দোনেশিয়া’র একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা।

গত কয়েক দিন ধরে রাজধানী জাকার্তাসহ বিভিন্ন শহরে মসজিদের ইফতার মাহফিলে দেওয়া খুৎবায় মুল্যস্ফীতির প্রসঙ্গটি টানছেন ইমাম ও ইসলামি বক্তরা। এই সংকটের প্রাথমিক সমাধান রমজানের মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়ে খাদ্য ও অন্যান্য পণ্যের ক্রয়ে সংযম পালনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

ব্যাংক ইন্দোনেশিয়ার মাজালেঙ্কা শহর শাখা কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আগুং বুদিলাকসোনো রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, “মূল্যস্ফীতি একটি জাতীয় সমস্যা। যখন এই সংকট প্রাথমিক স্তরে, তখন ভোগ্যপণ্য ও পরিষেবা ক্রয়-বিক্রয় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সেটির সমাধান সম্ভব।”

“যেহেতু জনগণের মধ্যে ইমাম ও ধর্মীয় নেতাদের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তাই আমরা জনগণকে অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় থেকে বিরত রাখতে তাদের সহযোগিতা চেয়ে উলেমা কাউন্সিল এবং ইসলামিক সেন্টারের সহযোগিতা চেয়েছিলাম এবং তারা আমাদের সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছেন।”

ইন্দোনেশিয়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে প্রায় ১০ বছর আগে। তবে সম্প্রতি দেশটিতে ফের মূল্যস্ফীতির লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এই স্ফীতি পরিলক্ষিত হচ্ছে মূলত খাদ্যপণ্যের মূল্যের ক্ষেত্রে। রমজানের আগে থেকেই দেশটিতে ক্রমশ বাড়ছে সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম।

ইন্দোনেশিয়ার ২৮০ কোটি জনগণের অধিকাংশই মুসলিম। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে রমজান মাস সংযমের মাস হিসেবে পরিচিত। তাই খাদ্যপণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে জনগণকে মিতব্যয়ী হয়ে ওঠার পরামর্শ দেওয়ার জন্য রমজান মাসকেই বেছে নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

“আমাদেরকে অবশ্যই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ এটা রক্তচাপের মতো। যদি আপনার রক্তচাপ অনেক বেশি হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে আপনার স্বাস্থ্য ধ্বংস হবে; আর যদি অনেক কমে যায়, আপনি দুর্বল বোধ করবেন,” রয়টার্সকে বলেন আগুং বুদিলাকসোনো।

রাজধানী জাকার্তার সংলগ্ন শহর মাজালেঙ্কার বাসিন্দা এবং একটি মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ পাদিল (৫৩) রয়টার্সকে বলেন, “ইন্দোনেশিয়ার সামর্থবান মুসলিমদের মধ্যে রমজান মাসে খাদ্যপণ্য ক্রয়ের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। আমরা শুধু তাদের বলছি যে রমজান মানে শুধু সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস নয়, বরং জীবনের সর্বক্ষেত্রে সংযম পালনই রমজানের প্রধান শিক্ষা।”