মুসবা তিন্নি : হালাল উপার্জন ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত। উপার্জন হালাল না হলে বান্দার দোয়া ও ইবাদত কোনো কিছুই কবুল হয় না। তাই মোমিনের প্রধান দায়িত্ব হালাল উপার্জন করা এবং হারাম বর্জন করা। কিন্তু যথাযথ জ্ঞান না থাকায় অনেকেই জড়িয়ে পড়ে হারামের সঙ্গে। ফলে নষ্ট হয় সারাজীবনের আমল ও ইবাদত। সাধারণ মুসলমানকে হালাল-হারাম সম্পর্কে সচেতন করতে আমাদের এ বিশেষ আয়োজন। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। – পবিত্র ইসলাম
এগুলোর জোগান দিতে মানুষকে বেছে নিতে হয় সম্পদ উপার্জনের নানাবিধ পন্থা। জীবিকা নির্বাহের জন্য মানুষ যেসব পেশা অবলম্বন করে তা হলো কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, শিল্প প্রভৃতি। উপার্জনের মাধ্যম ব্যতীত কোনো ব্যক্তির পক্ষেই উপর্যুক্ত মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়। আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে সৃষ্টি করেই ক্ষান্ত হননি; বরং তাদের যাবতীয় মৌলিক অধিকারও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। সে লক্ষ্যে তিনি মহাবিশ্বের সব সৃষ্টিকে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করেছেন।
পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে ‘তিনিই সেই মহান সত্তা, যিনি পৃথিবীর সবকিছু তোমাদের (ব্যবহারের) জন্য তৈরি করেছেন।’ (সূরা বাকারা-২৯)। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি মানুষকে দিয়েছেন পূর্ণ স্বাধীনতা, যা তার এখতিয়ারভুক্ত একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। ফলে প্রত্যেকে নিজ নিজ যোগ্যতা, মেধা, শ্রম ও সময়ের যথোপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যেমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রয়াস চালায়।
মানবজীবনে অর্থনীতির গুরুত্ব অপরিসীম। এটি মানুষের জীবন নির্বাহের অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে সমাদৃত, মানব জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে পরিগণিত। মহান আল্লাহ মানুষকে এর গুরুত্ব অনুধাবন করানোর জন্য কোরআনে সালাতের পাশাপাশি জাকাত তথা অর্থের উল্লেখ ৮২ স্থানে করেছেন। শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ অর্থনৈতিক বিধানও নির্দেশ করেছেন। ফলে কোরআনুল কারিমকে একটি অর্থবিদ্যার মহাকোষ বললেও অত্যুক্তি হবে না।
মানুষ কীভাবে উপার্জন করবে, কোন পন্থায় তা ব্যয় করবে এবং উপার্জনের ক্ষেত্রে যাবতীয় অর্জনীয় ও বর্জনীয় গুণাবলি সম্পর্কে এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা কোরআনে বিদ্যমান। তাই তো ব্যক্তির উপার্জিত সম্পদে তিনি জাকাত ফরজ করেছেন, যেন সম্পদ এক শ্রেণির লোকের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। আল্লাহ তায়ালা ফরজ ইবাদত শেষে জীবিকা নির্বাহে উপার্জন করার লক্ষ্যে জমিনে ছড়িয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ প্রদান করবে এবং আল্লাহকে স্মরণ করবে যাতে সফলকাম হও।’ (সুরা জুমআ : ১০)।
নবী-রাসুলদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তারা নিজ হাতে কর্ম সম্পাদনকে অধিক পছন্দ করতেন। আমাদের প্রিয়নবী (সা.) এর জীবনে প্রাথমিক সময়ে ছাগল চরানো ও পরবর্তী সময়ে খাদিজা (রা.) এর ব্যবসায়িক দায়িত্ব পালনের বর্ণনা পাওয়া যায়, যা নিজ হাতে জীবিকা নির্বাহে উৎকৃষ্ট প্রমাণ বহন করে।সম্পাদনা: জেরিস মাশফিক
এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ