ইয়েমেনে আক্রমণ করে হুথিকেই জায়গা করে দিলো যুক্তরাষ্ট্র
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ডেস্ক রিপোর্টঃ
ইয়েমেনের সানার কাছে সামরিক মহড়ার সময় অ্যান্টি-ট্যাংক গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে হুথি যোদ্ধারা। ছবিটি গত বছরের ৩০ অক্টোবর তোলা
ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা চাইছিল, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের মতো শক্তি তাদের আক্রমণ করুক। এই বার্তাটাই তারা দেশের জনগণকে দিতে চাইছিল।
বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশ মনে করছে, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে যেভাবে ইয়েমেনে আক্রমণ চালিয়েছে, তাতে লাভ হচ্ছে হুথিদেরই।
ইরানের মদতপুষ্ট এই বিদ্রোহীরা দেশের মানুষকে অনেক দিন ধরেই বোঝানোর চেষ্টা করছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলের মতো শক্তিগুলোর সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি আক্রমণ তাতেই সিলমোহর লাগিয়ে দিল।
ওয়াশিংটন ইনফরমেশন রিসার্চ সেন্টার ফর ইয়েমেনের সাবেক ডিরেক্টর হিশাম-আল-ওমেইসি বলছেন, ‘গত আট বছর ধরে হুথি বিদ্রোহীরা তাদের বন্ধুদের বলার চেষ্টা করছে, তারা আমেরিকার সঙ্গে লড়াই করছে। ফলে আমেরিকার এই আক্রমণ তাদের সেই দাবিকে জিতিয়ে দিল।’
২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ চলছে। সৌদি আরবের মদতপুষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ইরানের মদতপুষ্ট হুথি বিদ্রোহীরা। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর দেশের উত্তর এবং পশ্চিম প্রান্ত এখন হুথিদের দখলে।
অর্থাৎ, ইয়েমেন থেকে লোহিত সাগরের ঢোকার যে রাস্তা, তা এখন হুথিদের হাতে। অন্যদিকে, দক্ষিণ ইয়েমেন সৌদি আরবের মদতপুষ্ট সরকারের হাতে। আন্তর্জাতিক ভাবে এই সরকারই ইয়েমেনে স্বীকৃত। দেশের পূর্বভাগ জনজাতির হাতে।
দীর্ঘ যুদ্ধে জর্জরিত ইয়েমেন। অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি। এই অবস্থায় সৌদির মদতপুষ্ট সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধ-বিরতিতে ঢুকেছে হুথি বিদ্রোহীরা। আলোচনা চলছে। হুতিদের দাবি, তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে। ইরান ছাড়া আর কোনও দেশই তাদের স্বীকৃতি দেয় না।
দেশের জনগণকে তারা বোঝাচ্ছিল, আমেরিকার সঙ্গে এই নিয়ে তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বস্তুত, সে কারণেই তারা লোহিত সাগরে একের পর এক আক্রমণ চালাচ্ছিল বিভিন্ন দেশের পণ্যবাহী জাহাজে। নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার সুযোগ খুঁজছিল তারা।
যেহেতু লোহিত সাগরের রাস্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ, তাই এই রাস্তাতেই আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। আমেরিকা কোনও কৌশলে না গিয়ে সরাসরি তাদের আক্রমণ করে হুথিদের চেষ্টাটাই আসলে সফল করে দিল।