জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
রমজানের শেষ দিকে এসে ফরিদপুরে হঠাৎ বেড়েছে বিদ্যুৎবিভ্রাট। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ফরিদপুরবাসী। একদিকে উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে গুমট আবহাওয়া বিরাজ করছে। সেইসঙ্গে মাঝে মাঝে ঝড়ো হাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে দেখা দিচ্ছে ত্রুটি।
জানা গেছে, দু’দিন আগে ঝড়ো হাওয়ার কারণে একনাগাড়ে প্রায় চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। নগর ও গ্রাম মিলিয়ে গোটা জেলাতেই এই দশা বিরাজ করছিল। এরমধ্যে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন স্থানে বেড়েছে লোডশেডিং।ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. (ওজোপাডিকো) ফরিদপুরের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় তাদের গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৯০ হাজারের মতো। এর বিপরীতে বিদ্যুতের চাহিদা পিকআওয়ারে ৪৮ মেগাওয়াট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। দু’টি কেন্দ্র থেকে এই বিদ্যুৎ বিতরণ করা হয়।
এর বাইরে জেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছেন প্রায় সাড়ে চার লাখ। তাদের চাহিদার পরিমাণ ১০৬ মেগাওয়াটের মতো। শহরের তুলনায় গ্রামেই লোডশেডিং বেশি হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহ সঙ্কটের পাশাপাশি সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় কোনো কোনো স্থানে।
শহরের আলীপুরের বাসিন্দা গৃহবধূ লিপিকা সুলতানা বলেন, এশার নামাজের সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। তারপর রাত ৯টার দিকে আসে। আবার রাত ১টার দিকে চলে যায় বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ না থাকায় পৌরসভার পানি সরবরাহ বন্ধ ছিল। সকালে অফিসগামীরাও মোটর চালাতে না পেরে পানি তুলতে পারেন না।
নগরকান্দার তালমা ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যার পর এশার আগে কারেন্ট চলে যায়। তারাবি নামাজ শেষ হওয়ার একটু আগে আসে। এরপর সকালে আবার বিদ্যুৎ চলে যায়। মধ্যরাতেও আরেকবার বিদ্যুৎ যায়।
বোয়ালমারী পৌরসদরের বাসিন্দা মো. সোহেল আহমেদ রাজন বলেন, গত কয়েকদিনে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে। দিনে রাতে কয়েক দফা লোডশেডিংয়ে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।ফরিদপুর জর্জ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সেলিমুজ্জামান বলেন, উষ্ণতা সামান্য বাড়তেই এমন অবস্থা। আগামী দিনে কী হবে সেটাই ভাবনার বিষয়। গত কয়েকদিনে লোডশেডিং বেড়েছে।
এ ব্যাপারে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি.এর (ওজোপাডিকো) ফরিদপুরের বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার আমিনুর রহমান বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার পর কিছুটা সময় বিদ্যুৎ ছিল না। আর ফজর নামাজের পর ঝড়ের কারণে কিছুটা সময় লাইন ফল্ট করেছিল। তবে আপাতত অন্য আর কোনো সমস্যা নেই।
তিনি আরও বলেন, ফরিদপুরে বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র-১ এর সরবরাহ এলাকায় ২০ থেকে ২১ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। সরবরাহও চাহিদামাফিক রয়েছে। গতকাল তিন থেকে সাড়ে তিন মেগাওয়াট কম সরবরাহ হওয়ায় কিছুটা লোডশেডিং করতে হয়।
এ বিষয়ে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. এর (ওজোপাডিকো) ফরিদপুরের বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার খুরশিদ আলম বলেন, তার কেন্দ্রে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ২৩ মেগাওয়াটের মতো। সরবরাহও তাই। ঝড়ের কারণে সবকয়টি ফিডার বন্ধ ছিল। অনেক জায়গায় গাছপালা পড়ে সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। এজন্য দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ ছিল না। তবে কয়েকটি স্থানে কারেন্ট ছিল না টেকনিক্যাল কারণে, লোডশেডিংয়ের কারণে নয়।