নিজস্ব প্রতিবেদক:
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে আজ বিউটি পার্লার বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন নারীরা। এ সময় স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা বুলেট ও হোস পাইপ দিয়ে পানি ছিটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে অনেক পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস বিউটি পার্লার। কিন্তু গত মাসে ক্ষমতাসীন তালেবানেরা দেশজুড়ে হাজার হাজার পার্লার বন্ধের নির্দেশ দেয়। দেশটির নারীদের জন্য বাড়ির বাইরে সামাজিক যোগাযোগের সুযোগ খুব কম। এই বিউটি পার্লারগুলো ছিল তার মধ্যে একটি। এমনকি কাবুলের বুচার স্ট্রিটে বিক্ষোভে একজনের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘আমার রুটি, পানি বন্ধ করবেন না।’
২০২১ সালের আগস্টে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে নারী ও শিশুদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি নারীদের পার্ক ও ব্যায়ামাগারেও যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং নারীদের বোরকা ছাড়া প্রকাশ্যে বের হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
গত জুন মাসে নীতি ও নৈতিকতা বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিউটি পার্লারগুলো বন্ধ করার জন্য মাত্র এক মাসের সময় দেয়। তাদের ভাষ্য, ‘এই সময়ের মধ্যে সেলুনগুলি তাদের স্টকে থাকা প্রসাধনীগুলি ব্যবহার করে শেষ করতে সক্ষম হবে। এতে তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতি কম হবে।’
মন্ত্রণালয় এই আদেশের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছে, রূপচর্চায় যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয় তাতে দরিদ্র পরিবারগুলোর উপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া পার্লারগুলোতে এমন কিছু সেবা দেওয়া হয়, যা ইসলামবিরোধী। এ ছাড়া বেশি প্রসাধনী থাকলে নারীদের অজু ঠিকভাবে হয় না। অন্যদিকে, কৃত্রিম চোখের পলক এবং চুল প্রতিস্থাপনও নিষিদ্ধ করা হয়।
এএফপির কাছে আদেশের একটি অনুলিপি হাতে এসেছে। সেখানে বার্তা সংস্থাটি দেখেছে, ‘সর্বোচ্চ নেতা’ হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার মৌখিক নির্দেশে এ আদেশ দেয়া হয়। আফগানিস্তানের মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী গত ২০ বছরে কাবুল এবং দেশের অন্যান্য শহরে অনেক বিউটি পার্লার প্রতিষ্ঠিত করেছে। ধীরে ধীরে এটি নারীদের জন্য পুরুষদের মত বাইরে গিয়ে একসঙ্গে হওয়ার ও নিজেদের মধ্যে ভাবের আদান–প্রদানের নিরাপদ স্থান হয়ে ওঠে। এছাড়া নারীদের জন্য আয়ের উৎসও হয়ে উঠে।