খেলাধুলা ডেস্ক:
বোলারদের নৈপুণ্যে শ্রীলঙ্কাকে মাত্র ১২৪ রানে আটকে দিলেও ম্যাচ কঠিন করে তুলেছে ব্যাটাররা। সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেষদিকে জাগিয়েছিল হারের শঙ্কা। যদিও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কল্যাণে ২ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় পায় বাংলাদেশ।
শনিবার ( ৮ জুন) ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানান, এরকম চাপের ম্যাচে তিনি আগে কখনো খেলেননি। প্রশংসা করেছেন বোলারদের। পরের তিন ম্যাচে ভালো করতে ব্যাটারদের ভূমিকা রাখতে হবে বলেও মত তার।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ। তবে জয় পেলেও টাইগারদের ব্যাটিং ছিল দুশ্চিন্তার কারণ। ১২৪ রান তাড়া করতে নেমেও জেগেছিল হারের শঙ্কা। দলের খাতায় মাত্র ২৮ রান যোগ হতে সাজঘরে পা রাখেন তিন ব্যাটার। তানজিদ তামিমের ৩, সৌম্য সরকার ০ আর শান্ত ৭ রান করে বিদায় নেন। এরপর তাওহিদ হৃদয়ের ২০ বলে ৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ঘুরে দাঁড়িয়ে সহজ জয়ের পথে এগোয় বাংলাদেশ। কিন্তু হাসারাঙ্গা, পাথিরানার পর শেষদিকে আবার নুয়ান থুশারার তোপে চাপে পড়ে টাইগাররা। একটুর জন্য ম্যাচ ফসকে যায়নি বাংলাদেশের হাত থেকে। ত্রাণকর্তা হয়ে রক্ষা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষমেশ ৬ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ।
সে দমবন্ধ পরিস্থিতি নিয়ে ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছে এরকম চাপের ম্যাচ এর আগে আমি খেলিনি।’
শ্রীলঙ্কাকে অল্প রানে আটকে দেয়ার অন্যতম নায়ক মুস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেন। দারুণ বোলিং উপহার দিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিবও। ম্যাচশেষে তাই দলের বোলারদের প্রশংসা করতে ভুলেননি শান্ত। আক্ষেপ ঝরেছে ব্যাটারদের দৈন্যদশা নিয়েও।
শান্ত বলেন, ‘আমরা সবাই জানতাম এই ম্যাচ কত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বোলিংয়ে শুরুটা ভালো পাইনি। তারপরে মাঝের ওভারে সিদ্ধান্তগুলো যেভাবে নিয়েছে বোলাররা, ফিল্ডাররা। সবাই ভালো ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু ব্যাটিং ভালো হয়নি। এই ধরণের চাপের ম্যাচে এরকম হবে। ওদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল। ওরা অনেক চেষ্টা করেছে। দিনশেষে দুইটা পয়েন্ট পেয়েছে, এজন্য ভালো লাগছে।’
আসর শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দলের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারের পর শান্তদের নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে হয়েছে অনেক ট্রল। তবে মূল আসরে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে দল। এমন জয়ের পর দল নিয়ে ট্রল বন্ধ হবে কিনা, এমন প্রশ্ন ছিল শান্তর কাছে।
টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘এটা তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা কথা বলে তারা বলতে পারে (ট্রল বন্ধ হবে কিনা)। আমরা আসলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতেও পারব না। আমার মনে হয় না খেলোয়াড়রা অনেক বেশি এগুলো নিয়ে ভাবে।’
শ্রীলঙ্কার হারিয়ে ‘ডি’ গ্রুপ থেকে সুপার এইটের পথে অনেকটা এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। তবে পথটা সহজ নয়। নেদারল্যান্ডস ও নেপাল ছোট দল হলেও, তাদের বিপক্ষে জিততে ব্যাটিংয়ে ভালো করার বিকল্প নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচটাকেও গুরুত্বের বিচারে রাখছেন টাইগার অধিনায়ক।
শান্ত বলেন, ‘এই জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, পরের তিন ম্যাচও গুরুত্বপূর্ণ। নতুন করে পরিকল্পনা করে আসতে হবে। ভালো খেলা ছাড়া উপায় নাই। ব্যাটাররা যদি আমরা অবদান রাখতে পারি তাহলে ভালো করতে পারব।’
বিশ্বকাপ মিশনে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ সোমবার (১০ জুন) দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।