ওরা কিশোর গ্যাংয়ের সশস্ত্র ৯ সদস্য, গণছিনতাই ওদের নেশা

প্রকাশিত: ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২, ২০২৩

এসএম দেলোয়ার হোসেন :

ওরা সংঘবদ্ধ। দিনের বেলায় লেগুনা, অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র যানবাহনের চালক-হেলপার হিসেবে কাজ করলেও সন্ধ্যা নামার পরপরই রাত যতো গভীর হতে থাকে ওরা ততই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। সশস্ত্র অবস্থায় রাজধানীর এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ঘুরে বেড়ায়। ওরা কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য।  দেশি-বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখিয়ে পথচারীদের কাছ থেকে  নগদ অর্থসহ সর্বস্ব লুটে নিয়ে গণছিনতাই করতো ওরা। এমনই একটি চক্রের সক্রিয় ৯ সদস্য সশস্ত্র অবস্থায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পুলিশের হাতে ধরা পরেছে। এরা হলো- লেগুনাচালক মো. আকাশ (১৯), ফুটপাতে গেঞ্জি বিক্রেতা মো. নয়ন (২০), ডানো কোম্পানির ভ্যানচালক মো. সজল ইসলাম (১৯), প্রত্যয় বাসের হেলপার মো. আবু কালাম (২১), অটোরিকশাচালক মো. আরিফ (১৯), চাঁদ উদ্যান আজিম গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কর্মী মো. সজীব (১৯), বাস গাড়ির রং মিস্ত্রী মো. কবির (২৩), রাজমিস্ত্রী মো. নাসির (১৯) ও লেগুনাচালক মো. সুজন (২০)। রোববার (১ অক্টোবর) নিউজ পোস্টকে এসব তথ্য জানিয়েছেন  ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে সজল।

তিনি জানান, রজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা গার্ডেন সিটি হাউজিং এলাকায় সশস্ত্র কিশোর গ্যাংয়ের ধারাবাহিক গণছিনতাইয়ের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গত শনিবার রাত থেকে রোববার রাত পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযানে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি মোবাইল ফোন, ৩টি চাপাতি ও ২টি ছোরা উদ্ধার করা হয়।

এডিসি মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদপুরের বসিলা ৪০ ফিট রাস্তা, ফিউচার হাউজিং, রাজধানী হাউজিং, বসিলা গার্ডেন সিটি, গ্রিন সিটি ও ঢাকা উদ্যানসহ বিভিন্ন এলাকার সিসি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনায় সঙ্গে জড়িতদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় ও সোর্সের মাধ্যমে তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ৩০/৩৫ জনকে বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তুরাগ নদীর তীরবর্তী ওয়াকওয়ের দিকে যেতে দেখা যায়।

গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষ একজনকে মারার জন্য তারা ঢাকা উদ্যানের দিকে যাচ্ছিল। যাওয়ার পথে তাদের কয়েকজন ওয়াকওয়েতে থাকা পথচারীদের মারধর ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তাদের মোবাইল, নগদ টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং ফেরার পথে কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালায়।

মোহাম্মদপুর থানার  অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহফুজুল হক ভুঞা জাগো নিউজকে বলেন, গ্রেফতাররা ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের নাম প্রকাশ করেছে। তাদের দেওয়া তথ্য ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতার ও অন্যসব মালামাল উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।