ওরা সংঘবদ্ধ ছিনতাইচক্র: জানালার পাশে বসা যাত্রীই ওদের টার্গেট

প্রকাশিত: ৩:০৪ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২৩

মো. সাইফুল ইসলাম:

ওরা সংঘবদ্ধ ছিনতাইচক্র। ওরা দলবদ্ধ হয়ে ব্যস্ততম বাসস্টপ ও ট্রাফিক সিগন্যালের মোড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘুরে বেড়ায়। ওদের মূল টার্গেট গণপরিবহ, পিকআপ ও প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য যানবাহনের জানালার পাশে বসে থাকা যাত্রীরা। সুযোগ বুঝেই যাত্রীর হাতে থাকা মোবাইল সেট, নগদ অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়ে ছোঁ মেরে ভোঁদৌড় দেয়া। ওরা কখনো বাধার মুখে পড়লে ছুরিকাঘাত করতেও দ্বিধা করে না। এমনই একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। রাজধানীতে পৃথক অভিযানে সংঘবদ্ধ ওই ছিনতাইচক্রের সক্রিয় পাঁচ সদস্যসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ধারালো চাকু। এরা হলো- মো. সুমন সেখ (৩০), মো. আব্দুল মতিন (৩০), মো. নয়ন (২৩), মো. বাবুল (২৮), মো. ইমরান সরদার (১৯)। গ্রেফতার বাকিরা তিনজন হলেন- শাহিন (২৬), ইব্রাহিম মিয়া (৩৮) ও রুবেল প্রকাশ লালাপো (২৫)। সোমবার (৩ জুলাই) দিবাগত রাতে নিউজ পোস্ট বিডিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।

তিনি বলেন, সোমবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিরপুর মডেল থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়। মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, গ্রেফতার সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা গণপরিবহনে চলাচল করা যাত্রীদের টার্গেট করত। বিশেষ করে যারা জানালার পাশে বসেন, তারাই এদের মূল টার্গেট। যাত্রীর হাতে থাকা মোবাইল, মানিব্যাগ বা ঘড়ি মুহূর্তেই ছোঁ মেরে ভোঁদৌড় দিয়ে নিয়ে যেত ওরা।

ওসি আরও বলেন, কেউ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে চাকু দিয়ে হাতে পোচ দেয় ওরা। তাদের এমন আঘাতে অনেকেই আহত হয়েছেন। ওরা যখনই পুলিশ দেখে, সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তায় পায়খানা করে দেয় এবং তা নিজেদের গায়ে মাখে ও আশপাশে ছুড়ে মারে। পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য ওরা এসব করতো।

মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় একই কায়দায় ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিকালে চাকুসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তারা পায়খানা করে পালানোর চেষ্টা করলেও তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার সুমনের বিরুদ্ধে পাঁচটি, মতিন ও নয়নের বিরুদ্ধে তিনটি করে মামলা রয়েছে বলেও জানান ওসি।

এদিকে, পৃথক অভিযানে সনি সিনেমা হলের সামনে থেকে চিহ্নিত ছিনতাইকারী শাহীন ও ইব্রাহিম মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া আরেক অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে রুবেল প্রকাশ লালাপোকে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই একাধিক মামলা রয়েছে। এ ব্যাপারে গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেফতারদের  মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দুপুরের দিকে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে বিজ্ঞ আতালাতে প্রেরণ করা হবে।