
দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের কড়াই বিল পর্যটন এলাকা। শীতকালে পরিযায়ী পাখি আসে। বিলের ৫০০ গাছ কাটার উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সমিতি। গত সপ্তাহে অর্ধেক গাছ কাটা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর বাধার মুখে গত সোমবার বিকেলে প্রশাসন গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছে।
গাছ ক্রেতা জোবায়দুর রহমান জানান, শ-চারেক আম, দুটি কাঁঠাল ও তিনটি বেল গাছ রয়েছে। এখানে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা অফিস আছে। দরপত্র হয়েছে। ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিয়েছেন। ২০০ গাছ কেটেছেন।
বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা হাঁস-মুরগি ও পশু পালন খামার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মকসেদ আলী মঙ্গলীয়া জানান, সরকারি খাস জমি। এ নিয়ে মামলা হয়েছে এবং রায় সমিতির পক্ষে রয়েছে। ১৯৭৫ সাল থেকে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে তারা চালাচ্ছেন। এখানে মুক্তিযোদ্ধারা সদস্য। এই গাছগুলো তাদের লাগানো। এগুলো আম্রপালি ও মল্লিকা জাতের আম গাছ। ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে ফল ধরে না। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এগুলো কেটে লিচু বাগান করবেন।
এলাকার মিজান হোসেন বলেন, এখানে গরমের সময় আসি। বাতাস পাওয়া যায়।
আকাশ ইসলাম বলেন, এই গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে এখন ছায়া থাকবে না।
কৃষক ফয়েজ উদ্দিন বলেন, আমরা ক্ষেতে কাজ করতে আসি। রোদ লাগলে ছায়ায় গা জুড়াই।
কৃষক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘গাছতলায় এসে জিরাইতাম। কে এই গাছগুলো কাটার অনুমতি দিল?’
স্থানীয় শিক্ষার্থী আলী আহসান আল মুজাহিদ বলেন, ‘সোমবার ঘুরতে এসে গাছ কাটা দেখতে পাই। উপজেলা প্রশাসনকে জানাই। এসি ল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) এ বিষয়ে জানেন না। বন বিভাগও জানে না। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা এখানে এসে গাছ কাটার কাগজপত্র দেখতে চান। এই কাগজের কোনো মূল্য নেই জানিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করে দেন।’
শিক্ষার্থী মহসীন কবির রাব্বি বলেন, ‘এটি দর্শনীয় স্থান। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসেন। আম গাছে মুকুল এসেছে, এ সময়ে গাছ কাটা কতটুকু যৌক্তিক, তা আমার বোধগম্য নয়। তদন্ত করে বিচার করতে হবে।’
বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘বন বিভাগের কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে মালপত্র জব্দ করা হয়েছে। যারা গাছ কেটেছে, তাদের ডেকে কথা বলেছি। তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। কারণ গাছগুলো ১ নম্বর খাস খতিয়ানের। অনুমতি ছাড়া সরকারি সম্পদ নষ্ট করায় আমরা মামলা করব।’