কপ-২৯ বৈঠকে কেন গেলেন না নরেন্দ্র মোদি বা ভূপেন্দ্র যাদব?

প্রকাশিত: ৬:১২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২৪

ডেস্ক রিপোর্ট:

কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যাচ্ছেন না দেশটির পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবও। সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং। তিনি ১৮-১৯ নভেম্বর কপ-২৯ এ যাবেন বলে জানা গেছে।

ভারতে এমনিতে প্রতিমন্ত্রীদের খুব একটা গুরুত্ব নেই। সাবেক রেলওয়ে প্রতিমন্ত্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলতেন, প্রতিমন্ত্রীরা হলেন আধা-মন্ত্রী। ফলে একজন প্রতিমন্ত্রী কপ ২৯-এ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করায় প্রশ্ন উঠেছে, এই সম্মেলনকে কি গুরুত্ব দিচ্ছে না ভারত?
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ১৬ থেকে ২১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর করবেন। তিনি নাইজেরিয়া, ব্রাজিল ও গায়ানা যাবেন।

কাকতালীয় হলেও ঘটনা হলো, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভাও কপ-২৯ এ আসেননি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-ও কপ-২৯ এ যোগ দেননি। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসও যাননি।
এরপর পরিবেশ বিজ্ঞানী বিল হেয়ার বার্তাসংস্থা এপি-কে বলেছেন, পরিবেশ নিয়ে সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির অভাব দেখা যাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়ার তাগিদটাই নেই।

রিপোর্ট কী বলছে?

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার্স অফ কমার্সের রিপোর্ট বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গত দশকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্ষতির পরিমাণ দুই ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এক ট্রিলিয়ন মানে একের পর ১২টা শূন্য। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, দুই নম্বরে আছে চীন ও তিন নম্বরে ভারত। ভারতের ক্ষতির পরিমাণ ১১ হাজার দুইশ কোটি ডলার।

আর যে তিন দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাদের রাষ্ট্রপ্রধানরাই কপ-২৯ এ যোগ দেননি।
কেন এই সিদ্ধান্ত?

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব কেন কপ-২৯ এ গেলেন না, সে বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।

বিজেপি সূত্র জানাচ্ছে, ভূপেন্দ্র যাদব মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটের দায়িত্বে আছেন। আগামী ২০ নভেম্বর মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। তাই দলের তরফে ভোটের গুরুদায়িত্ব সামলাতে গিয়েই কপ-২৯ এ তার যাওয়া হয়নি। মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোট বিজেপি-র কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিম ভারতের এই রাজ্যে বিজেপি-কে শরদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে এবং কংগ্রেস জোটকে হারিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে হবে। তাই ভূপেন্দ্র যাদবকে এই সময় মহারাষ্ট্রের বিষয়টিই দেখতে হবে।
ভারতের ঘোষণা

২০২২ সালে কপ-২৬ এ দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ২০৭০ সালে ভারত জিরো এমিশনের জায়গায় পৌঁছে যাবে।

ভারতের লক্ষ্য হলো, ২০৩০ সালের মধ্যে ক্লিন এনার্জির পরিমাণ ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে নেওয়া।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের পরিস্থিতি হলো, ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ৪৫২ দশমিক সাত গিগাওয়াট। তার মধ্যে ৪৪ দশমিক পাঁচ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন কয়লা বা তেলের উপর নির্ভরশীল নয়।