কমিশন চায় সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা, বিকেলে আসছে নতুন কর্মসূচি

প্রকাশিত: ২:৩১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২৪

বন্যা আক্তার:

ঢাবি অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে নিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের দাবিতে দ্রুত কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে তারা বলছেন, সাত কলেজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সংকট নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি ঘিরে কোনো প্রত্যাশা নেই। কারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, কমিশন গঠনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করার। সেজন্য নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের ফোকাল পার্সন জাকারিয়া বারী সাগর বলেন, আজ বিকেল ৩টায় ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজ সংস্কারের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি নিয়ে প্রতিক্রিয়া এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন সংক্রান্ত আলোচনার বিষয়ে জানানো হবে। একইসঙ্গে আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম তুলে ধরা হবে।

অপরদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি নিয়ে কোনো প্রত্যাশা নেই বলে মন্তব্য করেছেন সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের আরেক ফোকাল পার্সন আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে, এ সিদ্ধান্ত ছিল সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত। ফলে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে নিয়ে এ কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করা হয়েছিল, সেটা বিগত ৮ বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। সেজন্য আমরা সাত কলেজকে নিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছি।

আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিকভাবে তিনটি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছি। সেগুলো হচ্ছে —

১. সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার অভিপ্রায়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।

২. সংস্কার কমিশন অনধিক ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সাত কলেজের সমন্বয়ে শুধু মাত্র একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবেন।

৩. সংস্কার কমিশন বর্তমান কাঠামো সচল রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন। যাতে করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সেশন জটিলতার কোনো ধরনের পরিবেশ তৈরি না হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি কমিশন গঠনের। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আবারও সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, কেবলমাত্র আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের মাধ্যমেই সাত কলেজের সংকট সমাধান করা সম্ভব। আমরা সেই পথেই হাঁটছি।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে ৭ কলেজের অ্যাকাডেমিক প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে ১৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাতটি কলেজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনকল্পে এই কমিটি কাজ করবে। কমিটিতে কলেজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে সভাপতি ও সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপসচিবকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

আর বাকি সদস্যরা হলেন— বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের (উপাচার্য) প্রতিনিধি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের প্রতিনিধি, যুগ্মসচিব (বিশ্ববিদ্যালয় অধিশাখা-২), ঢাকা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ।

যে-সব কাজ করবে এই কমিটি

এই কমিটিকেই চারটি কাজ করার জন্য চিঠিতে বলা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে –

১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাতটি কলেজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা চিহ্নিতকরণ।

২. চিহ্নিত সমস্যা নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন।

৩. কমিটি আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন করবেন।

৪. কমিটি কাজের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবেন।