কাগজের মিনার বানিয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা

প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫

নিজেস্ব প্রতিবেদক:

 

যশোরের মনিরামপুরে একটি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙে শৌচাগার নির্মাণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকসহ দু’জনকে পুলিশ আটক করে। পরদিন বৃহস্পতিবার আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্তি পান। তবে শুক্রবার শিক্ষার্থীরা ইট ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরা করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

জানা যায়, উপজেলার কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পাশাপাশি অবস্থিত। একই মাঠের এক পাশে ৩০ বছর আগে বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। এ শহীদ মিনারে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিজয়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।

অভিযোগ রয়েছে, গত ১৫ জানুয়ারি কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ শহীদ মিনারটি ভেঙে সেখানে শৌচাগার (ওয়াশরুম) নির্মাণের উদ্যোগে নেন। এ ব্যাপারে বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাধা দিলেও কোনো কর্ণপাত করা হয়নি। ফলে বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করে। পরে বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দু’জনের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করা হয়। ইউএনও নিশাত তামান্নার নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু মোত্তালিব আলম সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান ১১ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ ও তার সহযোগী সুকুমার মল্লিককে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

মনিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী জানান, গত বুধবার আসামিদের গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়। পরদিন তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।

এদিকে শুক্রবার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইট ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার।

বৃহস্পতিবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন। এ সময় ইউএনও নিশাত তামান্না জানান, ইতোমধ্যে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নতুন করে শহীদ মিনার তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।