‘কানাডা-মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক শনিবার থেকেই’

প্রকাশিত: ১১:১১ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ শনিবারই মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ করে এবং চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। যদিও ট্রাম্প শুক্রবার বলেছিলেন কানাডার তেলের ওপর ১০ শতাংশের কম শুল্ক আরোপ করা হবে, যা ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। খবর বিবিসির।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প আরও বলেছিলেন যে ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন তিনি, কারণ সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো আচরণ করেনি। হ

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিয়াভিট বলেছেন, অবৈধ ফেন্টালিন (এক ধরনের মাদক) যুক্তরাষ্ট্রে বাজারজাতকরণের জবাবে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এটি (ফেন্টালিন) লাখ লাখ আমেরিকানকে হত্যা করেছে।

ট্রাম্প অবশ্য বারবার বলে আসছেন যে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি এবং বিপুল সংখ্যক অবৈধ অভিবাসীর বিষয়টিকে সামাল দেওয়ার জন্য এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার হোয়াইট হাউজে ব্রিফিংয়ে মিস লিয়াভিট বলেন,এগুলো প্রেসিডেন্টের অঙ্গীকার এবং তিনি অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করলেন।

নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের হুমকি দিয়েছিলেন। তবে হোয়াইট হাউজে ফেরার প্রথম দিনে এ সম্পর্কিত কোনও পদক্ষেপ তিনি নেননি।
এর পরিবর্তে তিনি ইস্যুটি পর্যালোচনার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ২০১৮ সাল থেকে প্রায় একই রকম। চলতি মাসের শুরুতে চীনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করেই ট্রাম্পের সুরক্ষাবাদের বিষয়ে সতর্ক করে একটি বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকির কথা উল্লেখ করেছেন।

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েশিয়াং বলেছেন, তার দেশ বাণিজ্য উত্তেজনা কমাতে ও আমদানি বাড়াতে একটি ‘উইন উইন’ পরিস্থিতি খুঁজছে।

চীন, কানাডা ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার। দেশটি ৪০ শতাংশ পণ্য এসব দেশ থেকে আমদানি করে থাকে। এখন শুল্ক বাড়ানোর পদক্ষেপ এসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধের সূচনা করতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও পণ্যের দাম বাড়াতে পারে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শুক্রবার বলেছেন। তিনি (ট্রাম্প) যদি আরও অগ্রসর হন আমরাও পদক্ষেপ নিব।

কানাডা ও মেক্সিকো ইতোমধ্যেই বলেছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পাল্টা পদক্ষেপ নিবে। একই সঙ্গে দেশ দুটি সীমান্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে ওয়াশিংটনকে আশ্বস্ত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র যদি কানাডা ও মেক্সিকো থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে কর আরোপ করে তাহলে সেটি জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনার জন্য ট্রাম্প যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেটি ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

শুল্ক হলো বিদেশে উৎপাদিত হয় এমন পণ্যের আমদানি কর।

তত্ত্বগতভাবে, বিদেশ থেকে আসা পণ্যে শুল্ক আরোপ করলে সেগুলোর দাম বাড়ে ও মানুষ সেগুলো কম ক্রয় করে। এর লক্ষ্য হলো মানুষ তখন সস্তায় দেশি পণ্য কিনবে এবং তা দেশের অর্থনীতিতে গতিশীল করবে।

তবে আমদানিকৃত জ্বালানির ওপর শুল্ক আরোপ করলে তা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের ওপর গিয়ে পড়তে পারে, যার ফলে সব ধরনের জিনিসের দাম বেড়ে যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৪০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করে এবং এর বড় অংশই আসে কানাডা থেকে। কানাডা ও ইংল্যান্ড এর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান মার্ক কার্নে বিবিসি নিউজনাইটকে বলেছেন, নতুন এই শুল্ক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আঘাত করবে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিবে।