কালভার্ট-সড়কের কাজ বন্ধ দুর্ভোগে পাঁচ গ্রামের মানুষ

প্রকাশিত: ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০২৪

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

কুমিল্লার তিতাসে মৌটুপী-ইউসুফপুর-নলচর সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার ও কালভার্ট নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে রয়েছে পাঁচ গ্রামের মানুষ। বিশেষ করে মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষার্থী এবং রোগী যাতায়াতে দুর্ভোগ বেশি হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের তথ্যমতে, গৌরীপুর-হোমনা সড়কের মৌটুপী থেকে ইউসুফপুর-নলচর পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে টেন্ডার পায় মেসার্স তন্নী এন্টারপ্রাইজ। এই সড়ক সংস্কারে ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল কার্যাদেশ দেওয়া হয়। যার মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। অপরদিকে সড়কটির প্রথম অংশে টু-ব্যান্ডের একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স এস রঞ্জন অ্যান্ড কোম্পানি। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪ লাখ টাকা।
সরেজমিন জানা যায়, কাঁচা রাস্তা দিয়ে কড়িকান্দি ইউনিয়নের ইউসুফপুর, নলচর, বন্দরামপুর এবং মজিদপুর ইউনিয়নের চাঁন্দনাগেরচর, মৌটুপী গ্রামের লোকজন যাতায়াত করে। ১০ বছর আগে গৌরীপুর-হোমনা সড়ক থেকে আধা কিলোমিটার রাস্তা সিসি ঢালাই দিলেও এই সংস্কার কাজে সেই সিসি ঢালাই ঠিকাদার তুলে ফেলে। দেড় বছর আগে ঠিকাদার সিসি ঢালাই তুলে ফেলার পর আর কোনো কাজ হয়নি। গত বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির কারণে রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে ওঠে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় গ্রামবাসীর কাদামাটি মাড়িয়ে মৌটুপী বাসস্ট্যান্ডে যাতায়াত করতে হতো। কালভার্টের স্থানে বিকল্প সড়ক নির্মাণ না করায় বর্ষায় গ্রামবাসীর উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করতে হয়েছে।
ইউসুফপুর গ্রামের অটোরিকশা চালক আক্তার হোসেন বলেন, ‘কালভার্ট নির্মাণের আগে এখানে ছোট সেতু ছিল। তখন আমরা হাজার-বারোশো টাকা ইনকাম করতাম। সেতুটি ভেঙে ফেলায় এবং কালভার্ট নির্মাণ না হওয়ায় রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় এখন পাঁচশ টাকাও ইনকাম করতে পারি না। রাস্তা ভাঙাচোরা বিধায় মানুষ হেঁটে চলে যায়।’
নলচর ও ইউসুফপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, ইউসুফপুর গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ দুইটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রয়েছে। মৌটুপীর অনেক শিক্ষার্থী এখানে লেখাপড়া করে। বিশেষ করে এদিকের গ্রামগুলোর লোকদের উপজেলা সদর এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যেতে হলে এই সড়ক ব্যবহার করতে হয়। মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের ছেলেমেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে ব্যাঘাত ঘটছে। রাস্তাটি সংস্কার ও কালভার্ট নির্মাণ আটকে থাকায় সর্বক্ষেত্রে এলাকার মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
ইউসুফপুর গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য রুবেল মিয়া বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি ঠিকাদারকে বারবার তাগাদা দিয়েছি। কোনো ফল পাইনি। বরং প্রতিদিন জনগণের কাছে কাজের জবাবদিহিতা করতে হয়। এটা শুধু ভোগান্তি না চরম ভোগান্তি হচ্ছে মানুষের।’
মেসার্স তন্নী এন্টারপ্রাইজের মালিক মোফাজ্জল হোসেন জানান, কালভার্টের জায়গায় পানি থাকায়, রাস্তা না থাকায় নির্মাণসামগ্রী নিতে পারছেন না তিনি। তাই কাজ বন্ধ রয়েছে। পানি শুকালে কাজ ধরবেন।
উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, কালভার্টের ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্ষার পানি আসায় কাজ বন্ধ ছিল। তবে শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে। রাস্তার ১০ শতাংশ সংস্কার হয়েছে। ঠিকাদার কিছু অংশে গাইডওয়াল নির্মাণ করেছে। একাধিক চিঠি দেওয়ার পরও সন্তোষজনক বক্তব্য না পাওয়ায় কাজ বাতিলের চূড়ান্ত নোটিস দেওয়া হয়েছে।