কূটনীতিকরা সন্তুষ্ট কি না চেহারা দেখে বলা মুশকিল: নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ইসি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
মোঃ সাইফুল ইসলাম :
‘কূটনীতিকরা সন্তুষ্ট কি না চেহারা দেখে বলা মুশকিল’
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) । তবে ইসির তথ্যে কূটনীতিকরা সন্তুষ্ট কি না, তা জানেন না পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
কূটনীতিকদের প্রতিক্রিয়া কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো চেহারা দেখে বলা মুশকিল।’ বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে কূটনীতিকদের সঙ্গে ইসির বৈঠক শেষে সচিব একথা বলেন।
বৈঠকের পরে বিদেশে কূটনৈতিক ও রাষ্ট্রদূতদের মতামত বা রিঅ্যাকশন কী, তারা আপনাদের কথায় কনভিন্স কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘এটা তো চেহারা দেখে বলা মুশকিল। তারা ইন্ডিভিজুয়ালি সন্তুষ্ট কি না এটা বলা মুশকিল। তবে ইলেকশন কমিশন যথাসাধ্য বোঝাতে সক্ষম হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। ৭ তারিখ যদি জনগণ ভোট দিতে আসে তাহলে তাদের চেষ্টা সফল হবে।’
কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন আজ ইলেকশন কমিশন থেকে এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে ঢাকাস্থ যে বিদেশি দূতাবাসগুলো আছে, তাদের যে প্রধানরা আছেন তাদের জন্য একটি ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রায় সব কটি দেশের রাষ্ট্রদূত আজ এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এখানে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের বিস্তারিত ব্রিফিং দেওয়া হয়েছে।’
বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সব কিছু বললেন। পরে তাদের মধ্য থেকে প্রশ্ন আহ্বান করলেন। পরে যেটা বোঝা গেলো,পশ্চিম দেশের দুই একজন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি আমার বক্তব্য তাদের বললাম, পাঁচ বছর পর পর ইলেকশন হয়, এমন একটা সুযোগ সব দেশের রাষ্ট্রদূতের হয় না। আমি নিজেও রাষ্ট্রদূত ছিলাম সুযোগ আসেনি। যেহেতু তারা সুযোগ পেয়েছে এ সুযোগকে তারা যেন ভালোমতো ব্যবহার করেন।’
তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশের দুই একজন রাষ্ট্রদূত আমাকে বললেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে।
তারাও ইলেকশন কমিশনে এসেছেন এবং বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তার আগের থেকে অনেকখানি আপডেট তাই এখানে এত প্রশ্ন হয়নি। একটা প্রশ্ন আসতে পারে তারা অনেক বেশি প্রশ্ন করেনি কেন? বলে রাখা ভালো, তারা বেশ কয়েকবার দফায় দফায় মিটিং করেছে ইসির সঙ্গে। তাই সেগুলো তারা অনেকখানি ওয়াকিবহাল।
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এখন পর্যন্ত ৬০ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক দেশে এসে পৌঁছেছেন। সর্বমোট ১২৭ জন পর্যবেক্ষক আসার কথা। এছাড়া ৭৩ জন বিদেশি সাংবাদিক অ্যাক্রিডিটেশন পেয়েছেন।
বিদেশি সাংবাদিকদের মধ্যে ১৭ জন বৃহস্পতিবার এসে পৌঁছেছেন। শুক্রবারের মধ্যে সবাই এসে পৌঁছে যাবেন। এখানে আমাদের একটা অফিস খোলা হয়েছে, আমরা সেখান থেকে আপনাদের আপডেট দিতে পারবো।
মোমেন বলেন, তারা একটা প্রশ্ন করেছে ইলেকশন কমিশনের কোনো চাপ আছে কি না, অথবা বিষয়টা কতখানি সত্য? এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, এ ধরনের কোনো চাপ নেই, চাপ দেওয়ার সুযোগও নেই। তবে যারা ভোট বর্জন করেছে, তাদের পক্ষ থেকে ভোট না দেওয়ার জন্য ভোটারদের ওপর একটা চাপ আছে।
পর্যবেক্ষকরা কোথায় যাবে এ বিষয়ে পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো সাবজেক্ট আছে কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, আমরা তাদের বলতে পারি না তারা যদি যেতে চায় যেখানে আমাদের এয়ারপোর্টগুলো আছে, সেসব জায়গায় তারা চাইলে যেতে পারে আমরা সহযোগিতা করবো। তারা যেখানেই যাক আমরা শুধু সহযোগিতা করতে পারি।
তিনি বলেন, আর তারা যদি ঢাকার মধ্যে ইলেকশন অবজার্ভ করতে চায় আমরা ঢাকার মধ্যে দুই ঘণ্টায় যেতে পারে বা দুই ঘণ্টায় আসতে পারে এ রকম একটা রোড প্ল্যান আমরা তাদের দিতে পারি। এর মধ্যে তারা যদি বলে আমি নারায়ণগঞ্জ যাবো, আমি গাজীপুর যাবো, আমি দোহার যাবো কিংবা আমি কুমিল্লায় যাবো, তখন আমরা তাদের বলতে পারি হ্যাঁ, তুমি দুই ঘণ্টার মধ্যে যেতে পারবে। বিষয়গুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
কতজন রাষ্ট্রদূত বা কূটনৈতিক এসেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরাতো সবাই দাওয়াত করেছি, সঠিক সংখ্যাটা বলতে পারবো না, তবে পঞ্চাশের অধিক দেশের প্রতিনিধিরা এসেছিলেন আজকের বৈঠকে।