জেলা প্রতিনিধি,যশোরঃ
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে যশোরের কেশবপুর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরুর প্রথম চার ঘণ্টায় ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। বুধবার (৮ মে) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট শুরুর প্রথম থেকেই উপজেলার কোনো কেন্দ্রেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইনের দেখা মেলেনি।
বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেলা ১২ পর্যন্ত গড়ে ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটাররা আসছেন ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন। এ নির্বাচনে তিনটি পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে সাতজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন দুইজন।২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি কেশবপুর পৌরসভা নির্বাচনে প্রথমবার ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে পৌরসভার বাইরে ১১টি ইউনিয়নের ভোটাররা এবারই প্রথম ইভিএমে ভোট দিচ্ছেন।
কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘন্টায় ৭১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৪৯৪ জন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন এ কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার শেখ আব্দুর রব।
এ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা উপজেলার ভোগতী এলাকার শফিউদ্দিন মোড়ল (৭০) বলেন, ‘ইভিএমে ভোট দেওয়ার সময় বুঝতে অসুবিধা হওয়ায় ওখানকার স্যাররা (দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) বুঝিয়ে দেন। পরে কোনো অসুবিধা হয়নি।’কেশবপুর সাহাপাড়ার অলোক সাহা (৫৮) বলেন, ভোট দিতে কোনো অসুবিধা হয়নি। ভালোভাবেই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি।
ভোট দিতে আসা কেশবপুর পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইভিএম হলো সময় উপযোগী পদ্ধতি। খুবই অল্প সময়ের ভেতর ভোট দেওয়া যায়। এই ভোটে কোনো এদিক-ওদিক করার সুযোগ নেই। এর আগে উপজেলার মধ্যকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেশবপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম লক্ষ্য করা গেছে।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার জন্য মাঠে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। মাঠে রয়েছেন ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নিয়োগ করা হয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। এছাড়া মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে পুলিশ, আনসার, র্যাব এবং বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি জানান, উপজেলার ৯৫টি কেন্দ্রে ১২টা পর্যন্ত ১৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে।’এদিকে ভোটাররা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে সাতজনের ভেতর চারজনের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও চতুর্মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
তারা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল হালিমের ছেলে মঙ্গলকোট ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ-নূর-আল আহসান বাচ্চু (দোয়াত-কলম), বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলামের ছেলে উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক কাজী মুজাহীদুল ইসলাম পান্না (হেলিকপ্টার), বর্তমান উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা আকতার সাদেক (শালিক) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মফিজুর রহমান (ঘোড়া)। এদের বাইরে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার সম্পাদক এস এম মাহবুবুর রহমান (মোটর সাইকেল), ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুর রহমান (জোড়া ফুল) ও ব্যবসায়ী ইমদাদুল হক (আনারস)।
এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক পলাশ কুমার মল্লিক (উড়োজাহাজ), সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ রানা (মাইক), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুমন সাহা (চশমা), আব্দুল্লাহ আল মামুন (তালা) ও মনিরুল ইসলাম (টিউবওয়েল)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী রাবেয়া খাতুন (ফুটবল) ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মনিরা খানম (কলস)।